দেওয়াল লিখন স্বপন দেবনাথের।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়ার পর দিনই প্রস্তুতিতে নেমে পড়ল তৃণমূল। দেওয়াল লিখন থেকে মিছিল, রবিবারই নানা এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি নিলেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করার কাজও চলছে বলে দলের জেলা নেতৃত্ব জানান। বিরোধীদের অবশ্য এ দিন সে ভাবে মাঠে নামতে দেখা যায়নি। কম সময়ের মধ্যে ভোট করানোর অভিযোগ তুলেও জেলার সিপিএম এবং বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করবেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় পঞ্চায়েতের আসন রয়েছে ৩২৩৪টি, পঞ্চায়েত সমিতির ৬১৮টি ও জেলা পরিষদ আসন ৫৮টি। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মনোনয়ন পর্ব। প্রার্থিপদ চূড়ান্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলি এ দিন বৈঠক করে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের নজরুল মঞ্চে বৈঠক করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ। দলীয় কর্মীদের তিনি জানান, সহমতের ভিত্তিতে প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করতে হবে। কাটোয়ার দাইহাঁটে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ।
তৃণমূল সুত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে দলের ব্লক কমিটিগুলিকে। জেলা পরিষদের প্রার্থিতালিকার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য কমিটি। ভোট ঘোষণা হওয়ার পরেই ব্লক কমিটিগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়, রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করে তালিকা জেলা নেতৃত্বের হাতে তুলে দিতে হবে। রবিবার স্বপনবাবু বলেন, ‘‘সোমবার দুপুরের মধ্যে সমস্ত প্রার্থিতালিকা তৈরি করে দলের অনুমোদন নেওয়া হবে। ভোটে আমরা উন্নয়নকেই হাতিয়ার করব।’’
যে এলাকা থেকে জিতে জেলা সভাধিপতি হয়েছিলেন দেবু টুডু, সেই কালনা ২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি প্রণব রায় বলেন, ‘‘আমাদের তালিকা তৈরি। জেলা নেতৃত্বের কাছে রবিবার তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা সভাধিপতি, কালনার বিধায়কের উপস্থিতিতেই ঘোষণা হবে তালিকা।’’ এর পরেই দফায়-দফায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এই ব্লকে জেলা পরিষদের দু’টি আসন রয়েছে। জেলা সভাধিপতির আসন এ বার মহিলা সংরক্ষিত হলেও ওই ব্লকের একটি আসন থেকে দেবুবাবুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অনেকটা নিশ্চিত বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি।
জিউধারায় মিছিলে তৃণমূল নেতারা। নিজস্ব চিত্র
রবিবার শাসকদলের তরফে বর্ধমানের সরাইটিকর, বেলকাশ থেকে কালনা, গলসি, পূর্বস্থলী-সহ জেলার নানা এলাকায় দলের দেওয়াল লিখন শুরু করা হয়েছে জোরকদমে। পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুরে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেওয়াল লিখনে হাত লাগান জেলা সভাপতি স্বপনবাবুও। কালনা ২ ব্লকের জিউধারা এলাকায় মিছিলও করে তৃণমূল। ছিলেন দেবুবাবু ও কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু।
বিরোধীরা অবশ্য তড়িঘড়ি ভোট নিয়ে সরব হয়েছে এ দিনও। বিজেপি-র অন্যতম রাজ্য সম্পাদক, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বাসিন্দা রাজীব ভৌমিক অভিযোগ করেন, স্বার্থসিদ্ধির জন্য এ ভাবে ভোটের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। তার পর ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করা যাবে। রাজীববাবুর বক্তব্য, ‘‘এতেই স্পষ্ট, মাঝের সময়কে কাজে লাগিয়ে শাসকদল অন্য দলের প্রার্থীদের উপরে চাপ তৈরি করবে।’’ তবে তাঁর দাবি, পূর্ব বর্ধমানে সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য দল তৈরি।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকেরও অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকার কার্যত রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পরিচালনা করে। ফলে, বিরোধীদের অপ্রস্তুত রেখে যা করা যায় তাই করেছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করব।’’ তিনি জানান, শীঘ্রই তাঁদের প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy