—প্রতীকী চিত্র।
অনুদান নিলে পুজো মণ্ডপে টাঙাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি, এমন নিদান দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। বিরোধীরা তো বটেই, পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশের প্রশ্ন, অনুদান তো আগেও এসেছে। এ বার এমন নিয়ম কেন? তাঁদের দাবি, সরকারি প্রকল্পের প্রচার মেনে নেওয়া যায়। কারণ তার মধ্যে জনগণকে জানানোরও একটা বিষয় থাকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙানোর যৌক্তিকতা কী? আর জি কর কাণ্ডে রাজ্য জুড়ে যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, তাতে তৃণমূলের আসন টলছে বলেই এমন নিদান, দাবি বিরোধীদের।
সোমবার বিকেলে ভাতার থানায় পুজো অনুদানের চেক দেওয়ার কর্মসূচি ছিল। ৬০টি পুজো কমিটিকে চেক দেওয়া হয়। সেখানেই পুলিশ কর্তাদের পাশে দাঁড়িয়ে বিধায়ক বলেন, “আপনারা যদি মনে করেন পুজো মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙানো যাবে না, তাহলে টাকাটা না নেওয়াই ভাল। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে টাকাটা নিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী সরকারের লোক। যিনি টাকাটা দিচ্ছেন, তাঁর ছবি যেন প্রত্যেক মণ্ডপে টাঙানো থাকে।’’ বিধায়কের বক্তব্যের নিন্দা করে ভিডিয়োটি এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী টাকা দিয়ে আনুগত্য কিনতে চাইছেন। এই মন্তব্য তার প্রমাণ।’’
বিধায়কের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন পুলিশকর্মীদের একাংশও। তাঁদের মতে, আর জি করের ঘটনার পরে অনেক সতর্ক থাকতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বড় কর্তারা নজর রাখছেন। পুলিশের অনুষ্ঠানে বিধায়কের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙানো নিয়ে মন্তব্য করা উচিত হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকটি পুজো-কর্তারাও বলেন, “সরকার অনুদান দিচ্ছে বলে কি মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হবে? বিধায়ক যে ভাষায় বলেছেন, তাতে তো দেবীর পাশেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙাতে হবে!”
ভাতারের বিজেপি নেতা স্নেহময় কুণ্ডুর দাবি, অনুদান নেওয়া মানে যদি ছবি লাগানো হয় তাহলে উজ্জ্বলা গ্যাস যোজনা ব্যবহারকারীদের প্রধানমন্ত্রীর ছবি লাগানো উচিত। ভাতারের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী রাজতন্ত্র কায়েম করেছেন। অনুদানের টাকা আসলে মানুষের করের টাকা। শারদ উৎসবের ঐতিহ্যকে শেষ করে রাজনৈতিক উদ্দেশে ক্লাবগুলোকে হাতিয়ার করে পুজো মণ্ডপ দখলের চেষ্টা করছে তৃণমূল।’’ যদিও তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের দাবি, “পেট্রল পাম্প, সমবায়-সহ নানা সরকারি জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর বড় বড় ছবি লাগানো থাকে। সিপিএম তো রাজ্যের জন্য কিছুই করেনি। বিরোধীদের মুখে সমালোচনা সাজে না।”
অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোনার। তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দুর্গা পুজো নিয়ে ভাবনা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। পুজোগুলিকে আরও সুন্দর ভাবে আয়োজনের জন্য এই কর্মসূচি। তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাতেই মণ্ডলে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিধায়ক। এটা নিয়ে অযথা সমালোচনা ঠিক নয়।’’
পরে বিধায়কের সাফাই, ‘‘আমি কোনও নিদান দিইনি। সবার কাছে অনুরোধ করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy