সাধন চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে, বুধবার এই দাবি করেছেন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী। এ দিনও তাঁর নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরে, উপাচার্য একদল পড়ুয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, এ দিন নতুন করে অশান্তির মুখে পড়তে হয়নি উপাচার্যকে। উপাচার্যের দাবি, “বিক্ষোভকারীরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আমাকে বাধা দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।” এ দিকে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যতক্ষণ ছিলেন, ততক্ষণ অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে গিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম, অগণতান্ত্রিক ভাবে প্রশাসন চালানোর অভিযোগে গত ১৪ মার্চ থেকে টানা অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও আধিকারিকদের বড় অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেটে চলছিল অবস্থান। এ দিকে, উপাচার্য জানান, তাঁর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ৫০ মিটারের মধ্যে অবস্থান-বিক্ষোভ করা যাবে না। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী বা আধিকারিকদের দফতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া যাবে না। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবে পুলিশ। হাই কোর্টের নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরে, গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী। তাঁকে যেন ঢুকতে বাধা দেওয়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। ওই দিনই উপাচার্য জানিয়েছিলেন, বুধবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন ও পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পূর্ব ঘোষণা মতো বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ উপাচার্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকেন। অন্য দিকে, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রশাসনিক ভবন থেকে ৫০ মিটার দূরেই অবস্থানে বসেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। উপাচার্য প্রবেশের মুখে তাঁরা স্লোগানও দেন। দুপুর ১টা নাগাদ নিজের কক্ষেই পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন উপাচার্য। জানা গিয়েছে, একাধিক বিভাগের ফি বৃদ্ধি, উর্দু বিভাগে শিক্ষকের অভাব, অ্যালায়েড হেলথ সায়েন্স বিভাগে রসায়নগার না থাকা, ও ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হয়। উপাচার্যের দাবি, “পড়ুয়াদের সমস্যাগুলি যথাসাধ্য সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছি।” বৈঠক শেষে পড়ুয়ারা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রনেতা শাহজাদ আব্বাসের দাবি, “মুষ্ঠিমেয় কয়েকজন পড়ুয়া বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। বেশির ভাগ পড়ুয়া এই বৈঠক বয়কট করেছেন। কারণ, আমরা তাঁর পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভরত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পাশে রয়েছি।”
এ দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা গেল, বিক্ষোভকরীরা প্রশাসনিক ভবন থেকে বেশ কিছুটা দূরে অবস্থানে বসেছেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তাঁরা। ওয়েবকুপার জেলা সম্পাদক বীরু রজক বলেন, “আমরা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। যতদিন না উপাচার্য অপসারিত হচ্ছেন, ততদিন এই বিক্ষোভ-অবস্থান চলবে।”
তবে, উপাচার্য সাধন জানান, বিক্ষোভকারীরা চাইলে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন। কিন্তু তাঁর কাছে মূল বিষয় হল পঠনপাঠন যেন বিঘ্নিত না হয়, সেটা নিশ্চিত করা। শিক্ষকেরা রুটিন মোতাবেক ঠিক মতো ক্লাস নিচ্ছেন কি না, তা আগামী সপ্তাহ থেকে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy