করোনা-সতর্কতায় নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে পাতা হল চেয়ার। সেখানেই উপভোক্তাদের অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
কার্ড না থাকলেও ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে আপাতত মিলবে রেশন। রেশনের জন্য করা হবে অস্থায়ী কার্ডের ব্যবস্থা। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়ে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তে রেশন মেলেনি বলে অভিযোগ উপভোক্তাদের একাংশের।
আসানসোলের চেলিডাঙায় রেশন নিতে এসে জান্নো খাতুনের অভিযোগ, ‘‘আমি রেশন কার্ডের জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন করেছি। সরকার বলেছে, আবেদন করলেই রেশন মিলবে। তাই এসেছিলাম। কিন্তু আমি রেশন পাইনি।’’ একই ‘অভিজ্ঞতা’ বার্নপুরের বৈষ্ণববাঁধ এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর যাদবের। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘রেশন দোকানের মালিকেরা কার্ড না থাকায় রেশন দিতে চাননি।’’
জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ নিয়ে গ্রাহক ও রেশন দোকান মালিকের মধ্যে বচসাও বাধে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পশ্চিম বর্ধমান রেশন ডিলার্স অ্যাশোসিয়েশনের কর্তারা জানান, সরকারি নির্দেশ না পাওয়ায় কার্ডহীন গ্রাহকদের রেশন দেওয়া যাচ্ছে না।
সমস্যা মেটাতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। মহকুমা খাদ্য নিয়ামক (আসানসোল) সৌমিত্র মাইতি বলেন, ‘‘আবেদন করেছেন অথচ কার্ড পাননি, এমন গ্রাহকদের কুপন দেওয়া হবে। তা দেখালেই নিকটবর্তী রেশন দোকান থেকে রেশন মিলবে। ১০ এপ্রিলের মধ্যে জেলায় এমন দু’লক্ষ গ্রাহককে কুপন দেওয়া হবে।’’ কিন্তু ‘লকডাউন’ ও কর্মীর অভাবের কারণে অধিকাংশ বড় ছাপাখানা বন্ধ থাকায় কুপন ছাপানো সমস্যার বলে জানান খাদ্য দফতরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা।
পাশাপাশি, রেশন দোকানে করোনা-সতর্কতায় কিছু পদক্ষেপ নজরে পড়েছে দুর্গাপুরে। দুর্গাপুর বাজারের রেশন ডিলার বাসব কেশের দোকানের সামনে দেখা গেল, লাইন দিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে চেয়ার রাখা। যাঁর উদ্যোগে এই ব্যবস্থা, সেই দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্রাহক-সুবিধার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট দূরত্বে চেয়ার পেতে রাখায় কেউ ইচ্ছা না থাকলেও নিয়ম মানতে বাধ্য হচ্ছেন।’’ সুরক্ষাবিধি মানা হচ্ছে কি না, তা নজরে রাখতে পুলিশের গাড়ি টহল দিতেও দেখা গিয়েছে। এসবি মোড়ের রেশন দোকানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, সেখানে উপভোক্তাদের জন্য নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অঙ্গদপুরের রেশন দোকানে বুধবারের মতোই সুরক্ষা বলয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে এ দিনও। দুর্গাপুর কেমিক্যালস মার্কেটের রেশন দোকানে গ্রাহকদের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব নিশ্চিত করতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গিয়েছে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে।
এ দিকে, রেশনের সামগ্রীর কালোবাজারির অভিযোগে দুর্গাপুর ইস্পাত সমবায় সমিতির কেন্দ্রীয় গুদামে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে অভিযানে যান দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ (সড়ক) অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই গুদাম থেকেই শহরের ৩৮টি রেশন দোকানে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। হিসেবে গরমিল ধরা পড়েছে বলে দাবি করেন তিনি। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘সঙ্কট-কালে এমন অনিয়ম কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি সমবায়মন্ত্রীকে জানানো হবে।’’ তবে সমবায় সমিতির আধিকারিক কমলজিৎ সিংহ দাবি করেন, ‘‘কোনও অনিয়ম হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে সব কর্মী আসছেন না। তাই সব হিসেব খাতায় তোলা যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy