পূর্বস্থলীর হাটসিমলা গৌরাঙ্গপাড়ায় বন্ধ তাঁতযন্ত্র। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর শাড়ি বোনার কাজ শুরু হয়েছে সবেমাত্র। ঠিক সেই সময়েই দুয়ারে হাজির দুর্যোগ। অগত্যা শাড়ি বোনার কাজ বন্ধ রেখেছেন কালনা মহকুমার বহু তাঁতশিল্পী।
বুধবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে শাড়ি বোনার কাজ ব্যাহত হয়েছে। সমুদ্রগড়, নসরৎপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় এখনও অনেক বাড়ি ও রাস্তায় জল জমে রয়েছে। জল ঢুকে পড়েছে তাঁত ঘরে।ভিজে আবহাওয়ায় তাঁত যন্ত্রে শাড়ি বুনতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্পীরা। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের তাঁতশিল্পী হুমায়ুন শেখ বলেন, ‘‘টানা দুর্যোগের জেরে তাঁত যন্ত্র ভারী হয়ে গিয়েছে। শাড়ি বোনা যাচ্ছে না। বহু তাঁতি শাড়ি বুনতে পারছেন না।’’
তাঁতশিল্পী তন্ময় বসাক, নারায়ণ বসাকের কথায়, ‘‘তাঁত ঘরে জল ঢুকে গিয়েছিল। এখনও ভিতরের পরিবেশ স্যাঁতসেঁতে।’’ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চার দিন শাড়ি বোনা যায়নি। রোদ ঝলমলে দিন না ফেরা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।’’ তাঁতিরা জানান, বেশ কিছু শাড়ির সুতো বাড়িতে রং করে শুকোতে হয়। বুধবার থেকে রোদ না ওঠায় সেই কাজ করা যাচ্ছে না। নসরৎপুর পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গপাড়া এলাকার বিকাশ বসাকের পাওয়ারলুম রয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘বাহা শাড়ি তৈরি হচ্ছিল। দুর্যোগের জেরে বৃষ্টির জল ঘরে, কারখানায় ঢুকে যায়। জল বার করে দিলেও শাড়ি তৈরি করা যাচ্ছে না। মাকু বসে যাচ্ছে।’’
পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক জানিয়েছেন, শিল্পীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। মহকুমা হ্যান্ডলুম আধিকারিক রঞ্জিত মাইতি বলেন, ‘‘সাতটি তাঁত সমবায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। খোঁজখবর নিয়েছি। সরকারি একটি প্রকল্প চালু হয়েছে, যেখানে তাঁত ঘরের ক্ষতি হলে ৫ হাজার টাকা ও ১০ হাজার টাকার তাঁত বোনার জন্য সুতো দেওয়া হয়। দুর্যোগে ক্ষতি হলে শিল্পীরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।’’
কালনা মহকুমার ধাত্রীগ্রাম, সুমুদ্রগড়ের শিল্পীদের তৈরি শাড়ির কদর রয়েছে দেশ জুড়ে। তবে গত এক দশক ধরে তাঁতশিল্পে ভাটার টান চলছে। এক সময়ে এই মহকুমায় ৫০ হাজারের বেশি তাঁতশিল্পী ছিলেন। এখন কমে হয়েছে কম-বেশি ১০ হাজার। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, গুজরাত ও বাংলাদেশে পাওয়ারলুমে তৈরি কম দামের শাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারায় কালনার তাঁতের শাড়ির কদর কমেছে। তবে প্রত্যেক বছর পুজোর আগে শাড়ির চাহিদা বাড়ে। ইতিমধ্যেই ধাত্রীগ্রাম এবং শ্রীরামপুরে সরকারি তাঁতের হাটে দু’টি শিবিরে এলাকার তাঁতিরা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার শাড়ি বিক্রি করেছেন তন্তুজকে। শিল্পীরা জানিয়েছেন, পুজোর কথা মাথায় রেখে শাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। থামাতে হয়েছে আচমকা দুর্যোগ আসায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy