প্রতীকী ছবি।
সাতসকালে দুর্গাপুরে চর্চায় ‘ভূমিকম্প’। কেউ বলছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় জানলাম।’’ কেউ বলছেন, ‘‘মনে হল, ক্ষণিকের জন্য একবার যেন কেঁপে গেল আশপাশ!’’ কেউ আবার বলছেন, ‘‘হবে হয়তো। জানি না।’’ তবে চর্চা হলেও সে ভাবে কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই, জানিয়েছে মহকুমা প্রশাসন (দুর্গাপুর)।
‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি’-র রেকর্ড অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৭টা ৫৪-য় ভূমিকম্প হয়েছে দুর্গাপুরে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.১। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নদিয়ায়, মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও লাগোয়া বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর বেশ কিছু অংশে মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়।
তবে ভূমিকম্প তেমন করে টের পাননি দুর্গাপুরের বাসিন্দাদের অনেকে। বেনাচিতির বাসিন্দা বিধান রায় বলেন, ‘‘কিছুই টের পাইনি।’’ দুর্গাপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অধ্যক্ষ সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিল্লির পরিচিত এক জন ভূমিকম্পের খবরের লিঙ্ক পাঠিয়ে জানতে চান কেমন আছি। ওই লিঙ্ক থেকেই জানলাম, শহরে ভূমিকম্প হয়েছে।’’ একই ভাবে কিছুই টের পাননি সেন মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী রাজকিশোর মোদক, দুর্গাপুর স্টেশনের মিষ্টি ব্যবসায়ী অমিত লাহারা। দুর্গাপুর পুরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শিপুল সাহা বলেন, ‘‘আমি বাজারে ছিলাম। দুপুর পর্যন্ত জানতাম না, ভূমিকম্প হয়েছে।’’ তবে বামুনাড়ার একটি বহুতলের বাসিন্দা মৌসুমী বণিক বলেন, ‘‘সকালে ক্ষণিকের জন্য মনে হল এক বার সব কেঁপে গেল। ভাবলাম, মাথা ঘুরছে।’
এ দিকে, দুর্গাপুরে কেউ ভূমিকম্প টের না পেলেও সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু পোস্টে দেখা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থেকে অনেকেই কম্পন টের পাওয়ার দাবি করেছেন।
ভূবিজ্ঞানীদের একাংশ জানান, ইউরেশীয় পাতের তলায় ভারতীয় পাত প্রবেশ করার ফলে হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি। এখনও প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট হারে ভারতীয় পাত ইউরেশীয় পাতের তলায় প্রবেশ করছে এবং তার ফলে প্রচুর শক্তি ভূগর্ভের বিভিন্ন চ্যুতি ও ‘হিঞ্জ’-এ জমা হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের তলা থেকে ময়মনসিংহ-কলকাতা ইয়োসিন হিঞ্জ এবং গড়ময়না-খণ্ডঘোষ চ্যুতি গিয়েছে। তাই এই এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ। ভূবিজ্ঞানীরা আরও জানান, ভূস্তরের নীচে থাকা ফল্ট বা চ্যুতিতে প্রচুর পরিমাণে শক্তি সঞ্চিত হতে থাকে এবং তা যখন বেরিয়ে আসে, তখনই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। এমন ছোট-ছোট ভূমিকম্পের ফলে, অতিরিক্ত শক্তি বেরিয়ে আসে। সেই সুবাদে প্রবল ভূমিকম্পের আশঙ্কা কিছুটা বিলম্বিত হয় বলেও বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি। খড়্গপুর আইআইটি-র ভূতত্ত্বের অধ্যাপক শঙ্করকুমার নাথ বলেন, ‘‘এ দিনের ভূমিকম্পটি দেবগ্রাম-বগুড়া ফল্ট থেকে হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy