দুর্গাপুরে এল যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র
দুর্গাপুরের বাতাস থেকে বিপজ্জনক ধূলিকণার পরিমাণ কমাতে ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রামের (এনসিএপি) আওতায় বুধবার বিশেষ যন্ত্র এল শহরে। দিন চারেক মহড়ার পরে পুরোদমে চালু হবে সেটি। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে ধুলো শুষে নেবে যন্ত্রটি। এমনটাই জানিয়েছেন দুর্গাপুর পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সুজন নন্দী।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে শিল্পাঞ্চলের বাতাসে প্রধান মাথাব্যথার কারণ হল, বাতাসে ভাসমান বিপজ্জনক ধূলিকণা পিএম ১০-এর (১০ মাইক্রোমিটারের ছোট আকারের ভাসমান ধূলিকণা) মাত্রাতিরিক্ত হার। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়ক, শহর জুড়ে নানা নির্মাণ কাজ প্রভৃতি কারণে দুর্গাপুরে বাতাসে ধূলিকণার হার বরাবর বেশি। এর ফলে ফুসফুস, হৃদরোগী এবং প্রবীণ ও শিশুদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়ে বলে চিকিৎসকেরা জানান। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে সালফার-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড প্রভৃতি গ্যাসের পরিমাণ ‘ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি’ সূচক অনুযায়ী সন্তোষজনক।
কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৪-এর মধ্যে বাতাসের ধূলিকণা ২০-৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯-এর ১০ জানুয়ারি এনসিএপি কর্মসূচি নিয়েছে। ২০১৪-২০১৮ সালের দূষণ পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখে দেশের মধ্যে ১২২টি শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুরে এই কর্মসূচির কাজ শুরু হয় ২০২২-এর ৮ জানুয়ারি থেকে। সে দিন ‘ওয়াটার স্প্রিংলার’ যন্ত্রের উদ্বোধন করা হয়। রাস্তা দিয়ে বিশেষ ওই গাড়ি যাওয়ার সময় নীচে ফোয়ারার মতো জল পড়ে রাস্তা ভিজে যায়। ধুলো ওড়ে না। সে বছরের ৭ জুলাই শহরে চালু হয় ‘মিস্ট ক্যানন’। এই যন্ত্র থেকে জল বাতাসে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে কুয়াশার মতো ছড়িয়ে পড়ে এবং বাতাসে ভাসমান বিপজ্জনক ধূলিকণাকে বাতাস থেকে নীচে নামিয়ে দেয়।
বুধবার শহরে এল ‘মেকানিক্যাল রোড শ্রেডিং মেশিন’। এই যন্ত্রের কাজ হল রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার উপরে থাকা ধূলিকণা শুষে নেওয়া। দুর্গাপুর শহরের মূলত রাস্তা এবং শিল্প কারখানা থেকে নির্গত ধূলিকণা, পিএম ১০-এর পরিমাণ কমাতে কাজ করবে যন্ত্রটি। কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা। ফল মিললে এমন যন্ত্র আরও আনার কথা ভাবা হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সুজন। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবারও সকাল থেকে বাতাসে পিএম ১০-এর পরিমাণ ১৫০ আশপাশে ঘোরাঘুরি করেছে, যা পরিমিত বলা যায়। তবে এই মাত্রা একশোর মধ্যে থাকলে তা স্বস্তিদায়ক। এ দিন দুপুরের পরে থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। সিধো-কানহু ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বসানো দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রে নথিবদ্ধ তথ্য অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সূচক নেমে হয় ১১০। পর্ষদের এক আধিকারিকের দাবি, নানা ভাবে লাগাতার চেষ্টার পরে আগের থেকে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy