সিমেন্ট তৈরির অন্যতম প্রধান উপকরণ ‘স্ল্যাগ’ লৌহ আকরিক গলিয়ে কাঁচা লোহা উৎপাদনের পরে অবশিষ্ট বর্জ্য)। কিন্তু ইস্কো থেকে সেই স্ল্যাগ পরিবহণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এ বিষয়ে বুধবার বণিক সংগঠনগুলি এবং ইস্কোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি। প্রশাসনের দাবি, ইস্কোর তরফে সমস্যা সমাধানে সদর্থক ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
জেলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিনিধিরা সম্প্রতি জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে জানান, গত কয়েক মাস ধরে তাঁরা ইস্কো থেকে স্ল্যাগ পেতে সমস্যায় পড়েছেন। আসানসোলের একটি সিমেন্ট কারখানার কর্ণধার তথা বণিক সংগঠনের পদাধিকারী পবন গুটগুটিয়া বলেন, ‘‘সম্প্রতি ইস্কো জানায়, রেলের রেক ভাড়া করে স্ল্যাগ নিতে হবে। ট্রাকে করে স্ল্যাগ পরিবহণ করা যাবে না।’’ পবনবাবু জানান, এত দিন ইস্কো থেকে ট্রাকে করে তাঁদের স্ল্যাগ পরিবহণ করা হয়েছে। কিন্তু রেলের রেক ভাড়া করে স্ল্যাগ নিতে হলে খরচ অনেক বাড়বে। কারণ, রেকের ভাড়া ট্রাকে করে পরিবহণের চেয়ে অনেকটাই বেশি। তা ছাড়া, রেল ইয়ার্ডে স্ল্যাগ নামানোর খরচ, সেখান থেকে ট্রাকে করে স্ল্যাগ কারখানায় নিয়ে যাওয়ার খরচও বাড়বে। সিমেন্ট কারখানাগুলির দাবি, এর ফলে আগের চেয়ে অন্তত খরচ চার গুণ বাড়বে। পবনবাবুর দাবি, ‘‘এই অবস্থায় আমরা লোকসানের মুখে পড়ে কারখানা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হব। কাজ হারাবেন জেলার প্রায় ২৫ টি সিমেন্ট কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক-কর্মী।’’
এই সমস্যা মেটানো এবং অনুসারী শিল্পের উন্নয়নের উদ্দেশ্যেই ওই দিন বিকেলে বৈঠক করেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘ইস্কো কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বাস্তবতার সঙ্গে বিবেচনার আর্জি জানিয়েছি। জেলার শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে টিকিয়ে রাখতে ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে বলেছি। তাঁরাও আশ্বাস দিয়েছেন।’’
বুধবারের ওই বৈঠকের পরে ইস্কো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, জেলার সিমেন্ট কারখানাগুলিতে ট্রাকে করে সিমেন্ট পৌঁছনোর জন্য একটি ‘রোডম্যাপ’ তৈরি করা হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত কম খরচে ও সুলভে যেন সিমেন্ট প্রস্তুতকারকেরা স্ল্যাগ পান, তা দেখা হবে। জেলাশাসক আরও জানান, জেলার অনুসারী শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহ দিতে ইস্কো-কে কর্মশালা আয়োজন করতে বলা হয়েছে। ওই কর্মশালার মাধ্যমে ইস্পাত শিল্পের অনুসারী শিল্প সামগ্রী প্রস্তুতকারীরা নিজের সামগ্রী তুলে ধরতে পারবেন। অন্য দিকে, তাঁদের কী ধরনের অনুসারী সামগ্রী দরকার, তা শিল্পোদ্যোগীদের দেখাতে পারবেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy