ভোটের কাজে যোগ না দেওয়ার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে আগেই। এ বার নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রায় সাড়ে তিনশো ভোটকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর অনুমতি চাইল জেলা রিটার্নিং অফিসারের দফতর। ১১ এপ্রিল আসানসোল-দুর্গাপুরের ন’টি বিধানসভা আসনের ভোটে দায়িত্ব পেয়েও হাজির না হওয়ায় এমন তদন্তের মুখে পড়ছেন ওই কর্মীরা।
জেলা রিটার্নিং অফিসারের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ এপ্রিল ভোটের সামগ্রী বিতরণ কেন্দ্রে (ডিসি) মোট ৩৩৫ জন ভোটকর্মী অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৮৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৮৩ জন ফার্স্ট পোলিং পার্সন, ৫৯ জন সেকেন্ড পোলিং পার্সন, ৫৮ জন থার্ড পোলিং পার্সেন এবং ৪৮ জন মাইক্রো-অবজার্ভার। জেলা রিটার্নিং অফিসার তথা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানান, এই সমস্ত ভোটকর্মীদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া, ভোটের কাজে যোগ না দেওয়ার অভিযোগে এই ভোটকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর অনুমতি চাওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
এ বার ভোট প্রক্রিয়ায় যোগ না দেওয়ার ব্যাপারে সরকারি কর্মীদের অনীহা শুরু থেকেই নজরে এসেছে। জেলার মোট ২৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের জন্য ৩৪,৭৮১ জন কর্মীর কাছে প্রশিক্ষণের চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে বর্ধমান সদরের ৪৫২ জন, কালনায় ৬৩০ জন, কাটোয়ায় ১৮৪ জন, আসানসোলে ১৫৯ ও দুর্গাপুরে ২৪২ জন, অর্থাৎ মোট ১৬৬৭ জন গরহাজির ছিলেন। তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছিল। তার পরেও শিল্পাঞ্চলে ভোটে ছবিটা যে খুব একটা বদলায়নি, প্রায় সাড়ে তিনশো কর্মীর বিনা নোটিসে গরহাজির থাকায় তা সামনে এসেছে।
কেন এই পরিস্থিতি? কয়েক জন ভোটকর্মী জানান, তীব্র গরম ও ভোটের সময়ে অশান্তির ভয়— মূলত এই দুই কারণেই এমন অনীহা। এ ছাড়া শারীরিক কারণে অনেকে ভোটের কাজে যোগ দিতে চাননি। সে জন্য প্রয়োজনীয় শংসাপত্র জমা দেওয়া হলেও তা ঠিক ভাবে যাচাই করা হয়নি বলে অভিযোগ কারও-কারও। ফলে, অসুবিধা সত্ত্বেও তাঁদের যেতে হয়েছিল। যদিও জেলা রিটার্নিং অফিসারের দফতরের তরফে এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
রিটার্নিং অফিসারের দফতর সূত্রে খবর, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর সেকশন ২৮এ অনুযায়ী, গরহাজির ভোটকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ভোটকর্মীর কাছে উপযুক্ত জবাব না পেলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার মতো শাস্তির সম্ভাবনা থাকে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy