Advertisement
০২ ডিসেম্বর ২০২৪
Security of Health Centers

প্রস্তাবেই আটকে রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তা

আমাদের হাতে আর কিছু নেই।’’ তাঁর মতে, শুধু মেডিক্যাল কলেজগুলির কথা ভাবলে হবে না, জেলার হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা নিয়েও পদক্ষেপ প্রয়োজন।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৮
Share: Save:

জেলার সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা জোরদার করতে কী প্রয়োজন, সরকারের তরফে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের (সিএমওএইচ) কাছে সে বিষয়ে বিশদ প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। প্রায় দু’মাস আগে সেই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও তা কার্যকরে কোনও অর্থ অনুমোদন করা হয়নি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। ফলে, জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেই তিমিরে। কেন এমন বঞ্চনা, প্রশ্ন নানা কেন্দ্রের কর্মী-চিকিৎসকদের।

কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসককে নির্যাতন করে খুনের ঘটনার পরেই রাজ্য জুড়ে সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা পরিকাঠামো আরও আঁটসাট করার পরিকল্পনা নেয় রাজ্য সরকার। সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি-সহ কলকাতার নানা হাসপাতালে সেই কাজও শুরু হয়। জেলার হাসপাতালগুলিতেও একই পদক্ষেপের দাবি তোলেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই অনুযায়ী জেলার হাসপাতালগুলিরতে নিরাপত্তা জোরদার করতে কী কী প্রয়োজন, তার প্রস্তাব চাওয়া হয়। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সেখানেই থেমে রয়েছে উদ্যোগ। পশ্চিম
বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মাস দুয়েক আগে বিশদ প্রস্তাব স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও সেই প্রস্তাব অনুযায়ী অর্থ অনুমোদন হয়নি। সিএমওএইচ শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, ‘‘অর্থ অনুমোদন না হলে কাজ করা যাবে না।
আমাদের হাতে আর কিছু নেই।’’ তাঁর মতে, শুধু মেডিক্যাল কলেজগুলির কথা ভাবলে হবে না, জেলার হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা নিয়েও পদক্ষেপ প্রয়োজন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, আর জি করের ঘটনার পরেই সরকারের তরফে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশ্রামকক্ষ, পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক শৌচাগার, হাসপাতাল চত্বরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় সিসি ক্যামেরা ইত্যাদির কথা বলা হয়। এ ছাড়া, হাসপাতালগুলির জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের বিষয়ও রয়েছে। সিএমওএইচ জানান, পশ্চিম বর্ধমানে একটি জেলা ও একটি মহকুমা হাসপাতাল ছাড়াও, চারটি গ্রামীণ ও আটটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। জেলা হাসপাতালের জন্য ২৪ জন, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের জন্য ১৬ জন, চারটি গ্রামীণ হাসপাতালের জন্য ২০ জন ও আটটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য ২৪ জন— মোট ৮৪ জন নিরাপত্তারক্ষী চাওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে তাঁদের জন্য প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হবে। সরকার সেই অর্থ এখনও অনুমোদন করেনি। ফলে, নিরাপত্তার জন্য পুরোপুরি পুলিশের উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে। জেলার ১৪ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য প্রায় ৭০০টি সিসি ক্যামেরা দরকার। এখন আসানসোল জেলা হাসপাতলে প্রায় ৬৮টি সিসি ক্যামেরা ও ২৯ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ৪৮টি সিসি ক্যামেরা ও ১৭ জন বেসরকারি রক্ষী রয়েছেন। তবে গ্রামীণ হাসপাতাল বা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও বেসরকারি রক্ষী নেই। পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরাও নেই।

আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপির সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, ‘‘আর জি করের ঘটনার পরেও সরকারের হুঁশ ফেরেনি। যা কিছু পরিকল্পনা, ওরা খাতায়-কলমে সীমাবদ্ধ রেখেছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’’ তাঁর অভিযোগ, জেলা রোগীকল্যাণ সমিতিতে কোনও বিরোধী জনপ্রতিনিধিকে রাখা হচ্ছে না। তাঁদের মতামতও নেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়ে নিরাপত্তার বিষয়ে পদক্ষেপ করছে। বিরোধীরা সমালোচনা ছাড়া কিছু করতে পারে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy