ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য ভাঙা হতে পারে ঘাটালেরই পুরপ্রধানের বাড়ি। যিনি আবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের জন্য মনিটারিং কমিটির সদস্য। প্রকল্পের স্বার্থে বাড়ি ভাঙতে তিনি রাজি বলে জানিয়ে দিলেন ঘাটাল পুরসভার প্রধান তুহিনকান্তি বেরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বন্যাবিধ্বস্ত মানুষদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। সেই কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। সে জন্য দশ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা বাড়ি প্রয়োজনে ভেঙে দিতেও রাজি বলে জানিয়ে দিয়েছেন পুরপ্রধান। শুধু তাই নয়, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে যাতে কোনও বাধা না আসে, সে জন্য ঘাটালবাসীর কাছে হাতজোড় করে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
তৃণমূলের তারকা সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব গত লোকসভা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেন, এ বার (তৃতীয় বার) তিনি জয়ী হলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করবেনই। বস্তুত, ঘাটালবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি এটি। ভোটে জয়লাভের পর প্রতিশ্রুতি রক্ষায় উদ্যোগী হন দেব। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ চলছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে বোঝানোর কাজ শুরু হয়েছে। জমির মাপজোকের মধ্যে ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান তুহিন জানতে পারেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য তাঁর দোতলা পাকা বাড়িটি ভাঙা পড়তে পারে।
আরও পড়ুন:
ঘাটাল শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। শিলাবতীর পশ্চিম পারে পড়ে ঘাটাল বাজার। ওই বাজারের দুই দিকে প্রায় ৬০ ফুট করে জমি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রকল্পের নকশায়। ইতিমধ্যে তার মাপজোক করে তালিকা তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। এ জন্য সরকারি জমি যেমন প্রয়োজন, তেমন দরকার ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কিছু জমি। ঘাটালকে বন্যা থেকে বাঁচাতে ১২টি ওয়ার্ডকে নিয়ে সার্কিট বাঁধ তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। সে জন্য শহরের ওই পশ্চিম দিকের নদীঘেঁষা জমি কিনে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে পড়ছে পুরপ্রধানের বসতবাড়িও। এ ছড়াও তালিকায় আছে শহরের শতাধিক দোকান। দোকানমালিকদের বড় অংশ জমি দিতে নারাজ। অনেকে বলছেন, আগে পুনর্বাসন, তার পর জমি বিক্রির কথা ভাববেন। তাঁদের সকলের দাবি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে বলে জানান তুহিন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, দরকারে নিজের বাড়ি ‘স্বপ্নের প্রকল্পের’ জন্য ‘বিসর্জন’ দিতে তিনি প্রস্তুত।