—ফাইল চিত্র
একশো দিনের প্রকল্পের গতি নিয়ে প্রতিটি ব্লক ও পঞ্চায়েতকে চিঠি দিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করল জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রজত নন্দার বিভিন্ন ব্লকে পাঠানো ওই চিঠিতে (এমজিএনআরজিএস/ভি/৪৫/১৪০২) জানানো হচ্ছে, ‘২০১৯-২০ আর্থিক বছরে শ্রম বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা থেকে আমরা দিনের পর দিন পিছিয়ে যাচ্ছি। লক্ষ্যে পৌঁছনোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কেউ ইতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছে না বলে দুঃখজনক চিত্র কাটতে চাইছে না’।
কিন্তু কেন এমন উদ্বেগ? ২০১৭-১৮ আর্থিকবর্ষে ২ কোটি ৯২ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করে দেশের সেরা হয়েছিল পূর্ব বর্ধমান। পরের অর্থবর্ষে এই জেলা ৩ কোটি ৪২ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করে। খরচ হয়, ৭৯৬ কোটি টাকা। এ বছর ‘শ্রম-বাজেটে’ ২ কোটি ৩৪ লক্ষ কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। অথচ, চলতি অর্থবর্ষে শুক্রবার পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, জেলায় ৬৮ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। খরচ হয়েছে ২৭৫ কোটি টাকা। তেমনই গত অর্থবর্ষে ৮৩.১৪ দিন গড় কাজ হয়েছিল। এ বছর গড়ে ৯০ দিনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে এ পর্যন্ত ৩০ দিনের মতো কাজ পেয়েছেন শ্রমিকেরা। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক বছরের মতো বাজেট টপকানো দূরঅস্ত্, বাজেটের অঙ্ক ছোঁয়াই এখন ‘চ্যালেঞ্জ’ বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, “শ্রম বাজেটে নির্ধারিত কর্মদিবস ছোঁয়ার জন্য একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সংযুক্তি করা হয়েছে। একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়ার জন্য নানা জনবহুল এলাকায় প্রচার চালানো হচ্ছে।’’ ওই চিঠিতেও লোকালয়ে প্রকল্পের প্রচার চালানো, কাজের সুযোগ তৈরি করা, নতুন কাজের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য পঞ্চায়েত কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মহকুমা ধরে পঞ্চায়েতের কর্তা, নির্মাণ সহায়কদের সঙ্গে আলোচনাতেও গতি আনার বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। আজ, সোমবার, কাটোয়া মহকুমায় এমন ‘আলোচনা’ হওয়ার কথা বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।
তবে এর পরেও সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষ কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আশঙ্কা থাকছে। পঞ্চায়েতের কর্তাদের একাংশের দাবি, চলতি অর্থবর্ষের অবশিষ্ট তিন মাসে ৯০ দিনের মতো কাজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তাতেও শ্রম বাজেট ছোঁয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রশাসনিক ‘চাপের’ কারণে পঞ্চায়েত স্তরে নানা কাজে ‘জল’ মেশার আশঙ্কাও রয়েছে।
এমন আশঙ্কার কারণ, অতীতের কিছু অভিজ্ঞতা। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের হাল দেখতে এসে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা ভাতার, খণ্ডঘোষ, আউশগ্রাম-সহ বিভিন্ন ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের ‘অনিয়ম’ দেখে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য রাজ্যকে চিঠিও দেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনকে ফের চিঠি দিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার রিপোর্ট চেয়েছেন কেন্দ্রের কর্তারা। যদিও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বিভিন্ন আলোচনা বা বৈঠকে জেলাশাসক সাফ জানাচ্ছেন, কোনও রকম ‘চাপের’ জেরে হাজিরা খাতায় ভুল এন্ট্রি, প্রকল্প নিয়ে গরমিল করা যাবে না।
জেলার উন্নয়ন ভবন থেকে জানা যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসকের ওই চিঠির আগে জেলায় দিনে ১৫ হাজার কর্মদিবস তৈরি হত। ওই চিঠি যাওয়ার পরে পঞ্চায়েত স্তরে আলোচনা করে সেচ ব্যবস্থার উন্নতি, প্রতিটি পঞ্চায়েতে ‘আর্দেন স্টেডিয়াম’ তৈরি, খেলার মাঠের উন্নতি-সহ একাধিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
এখন প্রতি দিন ১ লক্ষ ৩৭ হাজার কর্মদিবস তৈরি হচ্ছে, যা এই মুহূর্তে রাজ্যে প্রথম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy