—প্রতীকী চিত্র।
অভিভাবকের অবর্তমানে কী হবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের?
গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের সভাঘরে দু’দিনব্যাপী ‘অটিজ়ম কনভেনশন’-এ এই প্রশ্নটাই ঘুরেফিরে এল বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের অভিভাবকদের মনে। এর উত্তর খুঁজতেই যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত, এমনকি বাংলাদেশ থেকেও এ শহরে ছুটে এসেছিলেন তাঁরা।
দু’দিনব্যাপী এই সমাবেশে উপস্থিত বিশেষজ্ঞেরা এই প্রসঙ্গে জোর দিয়েছেন ‘কমিউনিটি লিভিং’ বা জোট বেঁধে এক সঙ্গে থাকা ও এগিয়ে চলার উপরে। গুরুগ্রাম থেকে আসা লেখক, কুইজ বিশারদ জয় ভট্টাচার্য যেমন বললেন, ‘‘কলকাতার মতো পাড়া গুরুগ্রামে নেই। তাই প্রায়ই ছেলেকে নিয়ে বেড়াতে বেরিয়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষজনের সঙ্গে আলাপ করাই। ফাঁক পেলেই বন্ধু ও অন্য পরিচিতদের বাড়িতে ছেলেকে কিছু ক্ষণের জন্য রেখে আসি। এতে একটু হলেও বাকিদের মধ্যে ছেলেকে নিয়ে, ওর সমস্যাগুলি নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে।’’
চট্টগ্রাম থেকে আসা বাসবী মুহুরি আবার শোনালেন অন্য অভিজ্ঞতার কথা। ছোট ছেলের বিয়ের সম্বন্ধ দেখার সময়েই তাঁরা পাত্রীর পরিবারকে নিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের বড় ছেলের অটিজ়মের বিষয়টি। তাঁর কথায়, ‘‘পাত্রী ও তাঁর বাবা-মাকে
নিমন্ত্রণ করেছিলাম, দু’দিন আমাদের বাড়িতে থেকে বড় ছেলের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য। তাঁরা এসেছিলেন। সব দিক চিন্তা করে তাঁরা মত দেওয়ার পরেই বিয়ে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।’’ বর্তমানে বাসবী ও তাঁর মতো আরও পাঁচ অটিস্টিক ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রামের অদূরে বাড়ি তৈরি করেছেন। যেখানে নিজেদের অটিস্টিক সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে আরও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা।
তবে কোনও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তির আইনি অভিভাবকত্বেরও গুরুত্ব অনেক। আইনজীবী ইউ কে শুক্ল জানান, যে কোনও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্কের এক জন আইনি অভিভাবক থাকা প্রয়োজন। তিনি ওই ব্যক্তির দেখভালের পাশাপাশি, তাঁর আর্থিক বিষয়টিও দেখবেন। বাবা-মা চাইলে এই
স্বীকৃতি তাঁদের অপর কোনও সন্তান, পরিজন বা সরকার অনুমোদিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দিতে পারেন। এই পুরো বিষয়টির উপরে নজর
রাখে স্থানীয় পর্যায়ের কমিটি (এলএলসি), যার দায়িত্বে থাকেন জেলাশাসক বা সম পদমর্যাদার কোনও সরকারি আধিকারিক। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিই সুযোগ বুঝে আর্থিক নয়ছয় করলে? ওই
আইনজীবী জানান, এ ক্ষেত্রে পরিজনেরা, এমনকি প্রতিবেশীরাও প্রয়োজনে বিষয়টি এলএলসি-র সদস্যদের নজরে আনতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
তবে শুধু একসঙ্গে থাকাই যথেষ্ট নয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা যাতে নিজেদের কাজ স্বাধীন ভাবে করতে পারেন, সে জন্য তাঁদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা তৈরিতেও জোর দেওয়া হয়। যে সমস্ত বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা কথা বলতে পারেন না, তাঁরা কী ভাবে বিভিন্ন প্রযুক্তি ও অ্যাপের মাধ্যমে নিজের মনের কথা বোঝাতে পারবেন অথবা নতুন নতুন জিনিস শিখতে পারবেন, তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় ওই কর্মশালায়।
(শেষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy