Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Murder

ক্লাবের দখল নিয়ে বিবাদে খুনের নালিশ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর আকবরের উপরে হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।

শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:০৬
Share: Save:

ক্লাবের ‘দখল’ নিয়ে গোলমালে এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠল বর্ধমানে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে ক্লাবের অনুষ্ঠানবাড়িতে খাওয়াদাওয়া চলাকালীন তাড়া করে কোপানো হয় মহম্মদ আকবর ওরফে কালো (৫২) নামে ওই ব্যক্তিকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় শহরের পীরবাহারামের ডাঙাপাড়ার ওই বাসিন্দার। এই ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা তাদের কাছে দোষ স্বীকার করেছে। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বে ওই ব্যক্তি খুন হয়েছেন। যদিও তৃণমূল ও পুলিশ সূত্রের দাবি, স্থানীয় বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর আকবরের উপরে হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তখন মাথায় আঘাত পেয়ে প্রায় আড়াই মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী পাখিজা বিবির দাবি, ‘‘আমার স্বামীকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। ২০ বছর ধরে পাড়া সামালাতেন। ক্লাবেরও দায়িত্বে ছিলেন। তাই অনেকে শত্রু হয়ে গিয়েছিল। আগের বার হামলার পর থেকে আর পাড়ার বিষয়ে থাকতেন না।’’ পরিজনদের দাবি, এলাকার একাংশ ফের আকবরকে পাড়ার দায়িত্ব দিতে চাইছিলেন। মৃতের ভগ্নিপতি তথা স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সান্টুর দাবি, ‘‘রবিবার সকাল থেকে শ’খানেক ছেলে বাড়ি এসে বসেছিল। ওঁকে রাজি করিয়ে সন্ধ্যায় ফুল-মালায় সংবর্ধনা দিয়ে ক্লাবে নিয়ে যান।’’

স্থানীয় সূত্রের দাবি, ক্লাবের তৈরি একটি অনুষ্ঠানবাড়িতে রাতে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন হয়। সওয়া ১০টা নাগাদ পাড়ার ছোটরা যখন খেতে বসেছে, তখনই দেখা যায়, ২০-২২ জনের একটি দল আকবরকে তাড়া করেছে। তিনি ওই অনুষ্ঠানবাড়িতে ঢুকে পড়তেই, তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার সময়ে এলাকায় বোমাও পড়ে বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের।

পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত অভিযোগে শেখ নাজিমুদ্দিন, সাজু শেখ, শাহরুখ শেখ নামে তিন জনকে ধরা হয়েছে। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বাঁকার পাড়ের জমি ‘দখল’ নিয়ে ক্লাবের অন্দরে বিবাদ শুরু হয়। ধীরে-ধীরে পাড়ায় দু’টি গোষ্ঠী হয়ে যায়। এর মধ্যে আকবরের অনুগামীরা দিঘা বেড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে একটি ফ্লেক্স টাঙালে শনিবার রাতে সেটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। রবিবার সকাল থেকে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল চলে। দফায়-দফায় পুলিশও যায়। এর পরে আকবর ক্লাব চত্বরে ঢুকতেই হামলা চালানো হয় বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায়, ডিএসপি (সদর) শৌভিক পাত্র, বর্ধমানের আইসি পিন্টু সাহা।

এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের বড় বাহিনী রয়েছে এলাকায়। অনুষ্ঠানবাড়ির ভিতরে রক্তের দাগ। ছড়িয়ে রয়েছে রান্না করা ভাত-মাংস। বিজেপির দাবি, ওই এলাকায় কাটমানি থেকে সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করা নিয়ে তৃণমূলের ভিতর ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে। দলের বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার আহ্বায়ক কল্লোল নন্দনের দাবি, ‘‘তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বেই এক জনকে খুন হতে হয়েছে।’’ এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর শেখ সাহাবুদ্দিনের পাল্টা দাবি, ‘‘পুরোটাই পাড়া ও ক্লাবের ব্যাপার। রাজনীতির ছিটেফোঁটা নেই। প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime encroachment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy