nপ্রতিমা তৈরিতে এ ভাবেই ব্যস্ত থাকেন পূর্ণিমা পাল। ছবি: উদিত সিংহ
স্বামী আর মেয়েকে নিয়ে সংসার। সেই সংসারের হাল ফেরাতে স্বামীর শিল্পকর্মের সঙ্গী হয়ে উঠেছেন বর্ধমানের রায়ানের বাসিন্দা পূর্ণিমা পাল। প্রায় পনেরো বছর ধরে সমান তালে পেশায় মৃৎশিল্পী স্বামী সমীরবাবুর সঙ্গে প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি।
কী ভাবে আসা এই শিল্পমাধ্যমে? প্রতিমা তৈরির কাজ এ বারের মতো শেষ হয়েছে। খানিক গুছিয়ে নিয়ে প্রতিমা জানান, বাপের বাড়ির অমতে তাঁদের বিয়ে। বিয়ে করে নতুন সংসারে এসে দেখেন, স্বামী দিনরাত কাজ করলেও সময়মতো প্রতিমা ‘ডেলিভারি’ দিতে পারছেন না। কারণ, সেই সময়ে তাঁদের কারিগর রাখার সঙ্গতি ছিল না। এই পরিস্থিতিতে সমীরবাবুর কাছেই প্রতিমা শিল্পে হাতেখড়ি হয় তাঁর।
সেই সময়ে পূর্ণিমাদেবীরা থাকতেন বর্ধমান ১-র রায়নগরের ভাড়াবাড়িতে। সেখান থেকে খালুইবিল মাঠ পালপাড়ায় স্বামীর প্রতিমা তৈরির কারখানায় আসতে শুরু করেন তিনি। মাটি তৈরি, ঠাকুরের গয়না পরানো-সহ নানা কাজ শিখতে শুরু করেন তিনি।
ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে সময়, জানান পাল দম্পতি। তাঁরা জানান, একটা সময়ে লোকাভাব ও সঙ্গতির অভাবে দুর্গা পুজোর সময়ে পাঁচ-সাতটার বেশির ঠাকুর গড়ার বরাত নিতে পারতেন না। এখন সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে কুড়িতে। পাশাপাশি, বছরভর সরস্বতী, বিশ্বকর্মা-সহ অন্য নানা দেবদেবীর মূর্তিও তৈরি করেন পূর্ণিমাদেবী।
এখানেই শেষ নয়। মেয়েকে কলেজে ভর্তি করা, বিয়ে দেওয়া, এমনকি রায়ানে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করা— সংসারের প্রতিটি কোনা ধীরে ধীরে দশ হাতে সাজিয়ে তুলেছেন স্ত্রী-ই, জানান সমীরবাবু।
তবে এই কাজ করতে গিয়ে ‘রুটিন’ খানিক কঠিন হয়েছে। পূর্ণিমা জানান, পুজোর মরসুম তো বটেই, বছরের নানা সময়ে সকাল ৯টা থেকে কাজ শুরু হয়। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। মাঝে কয়েক ঘণ্টার বিরতি। পাশাপাশি, সামলাতে হয় বাড়ির হেঁসেলও।
স্বামী সমীরবাবু বলেন, ‘‘আমাদের সংসারের শুরুটাই বেশ কঠিন ছিল। সেই কঠিন সময়কেই সহজ করেছে পূর্ণিমা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy