Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ফড়ে রুখতে চাষিদের এসএমএস

ফড়েদের দৌরাত্ম্য রুখতে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন নানা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:০৮
Share: Save:

নিয়ম হল, কেউ নিজেকে ‘ভাগচাষি’ বলে খাদ্য দফতরের নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে জমা দিলে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু এর ফলে ঘুরপথে ‘ফড়ে’রাই ওই ফর্ম পূরণ করে ধান বিক্রি করবে, আর প্রকৃত চাষিরা মার খাবে বলে আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন। রবিবার বিকেলে কলকাতায় খাদ্য দফতরে একটি বৈঠকে জেলাশাসক বিজয় ভারতী এই প্রশ্ন তোলেন। মনিটরিং কমিটিতে বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ণ করার জন্যও খাদ্য দফতরের আবেদন জানাবে জেলা।

মন্ত্রীসভার বৈঠকে পরে রাজ্য কী করবে, সেই সিদ্ধান্ত পরে জানা যাবে। তার আগে ফড়েদের দৌরাত্ম্য রুখতে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন নানা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, ‘কৃষকবন্ধু’র আওতায় থাকা প্রত্যেক চাষি যাতে সরাসরি সহায়ক মূল্যে নিকটবর্তী শিবিরে গিয়ে ধান বিক্রি করতে পারেন, তার জন্যে এসএমএস পাঠানো শুরু হয়েছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “প্রকৃত চাষিরা যাতে ধান বিক্রি করতে গিয়ে অসুবিধার মধ্যে না পড়েন সেই জন্যই নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অভিজ্ঞতা, ক্ষুদ্র চাষিরা নানা কারণে শিবিরে গিয়ে ধান বিক্রি করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়েন। সমবায় যতক্ষণে গ্রামে গিয়ে ধান কিনতে শুরু করে, ততক্ষণে ছোট চাষিদের ধান চলে যায় ফড়েদের হাতে। এ বছর খোলা বাজারের দামের চেয়ে সহায়ক মূল্যে ধানের দাম অনেকটাই বেশি। তাই ফড়েদের দৌরাত্ম্য বাড়বে বলেই মনে করছে প্রশাসন। সে জন্য এ বার সরকারি শিবির খোলার সঙ্গেই অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম, বেনফেডের মতো সরকারি এজেন্সের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ধান কেনার জন্য মাঠে নামিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ২৩টি ‘সেন্ট্রাল প্রোকিওরমেন্ট সেন্টার’ (সিপিসি) খুলে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়েছে। গলসি থানা এলাকায় আরও ৮টি ‘ডিরেক্ট পারচেজ সেন্টার’ (ডিপিসি) খোলা হয়েছে। দ্বিতীয় স্তরে আরও সাতটি সিপিসি খোলা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি বলেন, “এ বছর অনেক আগেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ধান কিনতে শুরু করেছে। প্রয়োজন হলে আরও শিবির খোলা হবে।’’ অত্যাবশকীয় পণ্য নিগমের জেলা প্রকল্প ম্যানেজার গৌতম দাস বলেন, “৩৬টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। গলসি ২ ব্লকে ধান কেনা শুরু হয়েছে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানে চাষির সংখ্যা ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭৫৯ জন। এর মধ্যে কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নাম উঠেছে ২ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭৭৭ জনের। এই সব চাষিদের তথ্য-সহ মোবাইল নম্বর রয়েছে কৃষি দফতরের হাতে। কৃষি দফতর সেই তথ্য দিয়েছে প্রশাসনকে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭৪৩ জনের কাছে এসএমএস পৌঁছে গিয়েছে।

কিন্তু যে সব চাষিদের তথ্য কৃষি দফতরের কাছে নেই, তাঁদের কাছে খাদ্য দফতর পৌঁছবে কী ভাবে? কলকাতার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাজ্য জুড়ে ধান বিক্রি নিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। একই সঙ্গে জেলা তথ্য দফতরের মাধ্যমেও প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় স্তরে প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে।

এ দিন কাটোয়ায় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও বলেন, ‘‘সহায়ক মূল্যে ধান কেনার সময়ে ফড়েদের উৎপাত বন্ধ করতে হবে। কৃষকের জমির উৎপাদিত ধানের পরিমাণ অনুযায়ী তাঁদের স্লিপ দেওয়া, ধান ক্রয়কেন্দ্রগুলিতে পঞ্চায়েত ও কৃষি দফতরের কর্মীদের নজরদারি চালানোর মতো কাজগুলি করা দরকার। স্বচ্ছতা আনতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Purba Bardhaman Rice Middleman Farmers SMS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy