Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bardhaman

আর্সেনিকমুক্ত জল দিতে ৪৮টি প্রকল্প

গত বছরের শেষেও ওই ক’টি ব্লকের ২৬টি গ্রামে জলে আর্সেনিকের সন্ধান মিলেছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:২২
Share: Save:

১৯৯৭-৯৮ সাল। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদরায় প্রথম আর্সেনিক আক্রান্ত হন একটি পরিবারের সাত জন। তবে গত তেইশ বছরে আর্সেনিক শুধুমাত্র ওই গ্রাম বা ব্লকে আটকে নেই, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার অন্তত পাঁচটি ব্লকের বেশ কিছু জায়গার জলে আর্সেনিক মিলেছে। গত বছরের শেষেও ওই ক’টি ব্লকের ২৬টি গ্রামে জলে আর্সেনিকের সন্ধান মিলেছে। সে কারণে ওই সব গ্রামে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পরিষদ। কর্মাধ্যক্ষ (জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর) বাগবুল ইসলাম বলেন, “ওই গ্রামগুলিতে আট কোটি খরচ করে ৪৮টি আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ সুবিধা পাবেন।’’
আর্সেনিক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন জাতীয় শিক্ষক দেবাশিস নাগ। তাঁর কথায়, “আর্সেনিকের বিষ ছড়িয়ে পড়ছে। গঙ্গা তীরবর্তী ব্লকগুলিতে নদীর জল শোধন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়ি-বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্যই দীর্ঘদিন ধরে আমাদের আন্দোলন চলছে।’’ আর্সেনিক আক্রান্তদের একাংশেরও দাবি, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আর্সেনিক যুক্ত জল পেটে যাওয়া মানেই বিষ পান করা। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ আদালত বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি আর্সেনিক-আক্রান্ত এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবারহের জন্য সুপারিশ করে। পিএইচই দফতর সূত্রে জানা যায়, নতুন ৪৮টি প্রকল্প সৌর বিদ্যুতের সাহায্যে চালানো হবে। প্রকল্পগুলি হবে—কালনা ২ ব্লকের কল্যাণপুরে, পিন্ডিরা, সাতগাছি, বৈদ্যপুরে। কাটোয়া ১ ব্লকের পানুহাট, কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ, গাজিপুর, শ্রীবাটি, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বগপুর, জাহাননগর, দোগাছিয়া, শ্রীরামপুর, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের মুকসিমপাড়া, পাটুলি, পিলা এলাকায়।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও ‘স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টর’ (সুইড) সূত্রে জানা যায়, জেলায় আর্সেনিকোসিসের (আর্সেনিকজনিত রোগ) খোঁজ মেলার পরে, সরকার নড়েচড়ে বসে। গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় আর্সেনিকের সন্ধানে জল পরীক্ষা করা হয়। গঙ্গা তীরবর্তী কাটোয়া ও পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে এবং কালনা ২ ব্লকের বেশ কিছু জায়গার জলে আর্সেনিক মেলে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কমলনগরে ভাগীরথীর জল শোধন করে সরবরাহ করছে জনস্বাস্থ্য দফতর। ওই দফতর সূত্রে জানা যায়, জলে আর্সেনিকের নির্ধারিত মাত্রা থাকার কথা ০.০১ মিলিলিটার। সেখানে অনেক বেশি আর্সেনিক রয়েছে ওই এলাকায়।
পিএইচই বর্ধমানের এক এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ কুণ্ডু বলেন, “আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা ও প্রকল্প রূপায়ণের কাজ চলছে।’’ সুইড-এর ভূত্বত্ত্ববিদ সুজিত প্রামাণিক বলেন, “ওই পাঁচটি ব্লকে মাটি থেকে জল তোলার ক্ষেত্রে আমরা কড়া ভূমিকা নিয়েছি। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বা চাষের জন্য জলের প্রয়োজন হলে আমাদের বিশেষজ্ঞ কমিটি খতিয়ে দেখে তার পরেই অনুমোদন দেওয়া হয়।’’ চাষের জন্যও আর্সেনিকমুক্ত জল সরবরাহ করা যায় কি না, তা বিশেষজ্ঞ কমিটি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Arsenic Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy