বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।
ক্রিকেটারদের জন্য ১০টি নিষেধাজ্ঞা আনতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সেই সঙ্গে থাকছে নিয়ম না মানার শাস্তিও। কোনও ক্রিকেটার যদি বোর্ডের ১০ নিয়ম অমান্য করেন তা হলে তাঁর আইপিএল খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। হতে পারে জরিমানাও। এমনটাই জানা গিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ সূত্রে।
বৃহস্পতিবার রাতেই জানা গিয়েছিল ক্রিকেটারদের উপর ১০টি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে বোর্ড। শুক্রবার জানা গেল নিয়ম না মানার শাস্তি। সূত্রের খবর, বোর্ডের নিয়ম না মানলে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসাবে দেখা হবে, যার শাস্তি আইপিএল থেকে নির্বাসন। কাটা হতে পারে বার্ষিক চুক্তির টাকা এবং ম্যাচ ফি-ও। তবে কোচ এবং প্রধান নির্বাচককে আগাম জানিয়ে রাখলে শাস্তি এড়ানো সম্ভব।
বোর্ড নিয়মের যে খসড়া তৈরি করেছে, তাতে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা যেমন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, পরিবারের সঙ্গে যাতায়াত, অতিরিক্ত মাল নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বোর্ড চাইছে, জাতীয় দলে সুযোগ পেতে গেলে এবং কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় আসতে গেলে সকল ক্রিকেটারকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতেই হবে। এর ফলে ক্রিকেটারেরা ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিবেশের মধ্যে থাকবে, ম্যাচ ফিটনেস থাকবে এবং এর ফলে ঘরোয়া ক্রিকেটের মান আরও উন্নত হবে। তরুণ ক্রিকেটারদের উৎসাহ দেওয়ার জন্যেও সিনিয়রদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা প্রয়োজন। কোনও ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে না পারলে আগে থেকে কারণ জানাতে হবে। নির্বাচক প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।
বোর্ড ঠিক করেছে সমস্ত ক্রিকেটারকে দলের সঙ্গে থাকতে হবে। ম্যাচ এবং অনুশীলন সব ক্ষেত্রেই তাঁকে দলের সঙ্গে যেতে হবে। পরিবারের সঙ্গে আলাদা ভাবে যাতায়াত করা যাবে না। পরিবারের সঙ্গে যাতায়াত করতে হলে কোচ অথবা নির্বাচক কমিটির প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।
এখন থেকে যত খুশি জিনিসপত্র নিয়ে সফর করতে পারবেন না ক্রিকেটারেরা। বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী ৩০ দিনের বেশি সফরে গেলে ক্রিকেটারেরা পাঁচটি ব্যাগ নিতে পারবেন। তার মধ্যে দু’টি খেলার সরঞ্জামের কিট ব্যাগ। এই পাঁচটি ব্যাগের মোট ওজন ১৫০ কেজির বেশি হলে চলবে না। সাপোর্ট স্টাফেরা নিতে পারবেন ৮০ কেজি জিনিস। তাঁদের জন্য বরাদ্দ তিনটি ব্যাগ। ৩০ দিনের কম হলে ক্রিকেটারদের জন্য ব্যাগের সংখ্যা কমে হবে চার। কমবে ওজনও। সেই সময় ১২০ কেজির বেশি জিনিস নিতে পারবেন না তাঁরা। সাপোর্ট স্টাফেরা দু’টি ব্যাগ নিতে পারবেন। ওজন ৬০ কেজির বেশি হলে হবে না।
এখন থেকে ক্রিকেটারেরা আর নিজেদের ম্যানেজার, সহকারী, নিরাপত্তারক্ষী, রাঁধুনি নিয়ে যেতে পারবেন না। বোর্ডের অনুমতি নিতে হবে এমন কাউকে নিয়ে যেতে হলে। ক্রিকেটারেরা যাতে শুধু খেলার দিকেই মন দেন, সেই কারণে এমন সিদ্ধান্ত।
কোনও বাড়তি সরঞ্জাম বা ব্যক্তিগত কোনও জিনিস নিতে হলে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে ক্রিকেটারদের। বেঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে সেই জিনিস পাঠিয়ে অনুমতি নিতে হবে। তবে বাড়তি জিনিসের জন্য বাড়তি খরচের বোঝা নেবে না বোর্ড। সেই খরচ ক্রিকেটারদের করতে হবে।
নির্ধারিত অনুশীলনে আসা বাধ্যতামূলক করছে বোর্ড। দলের সঙ্গে অনুশীলনে যেতে হবে এবং ফিরতে হবে। দলকে একাত্ম করতে এমন সিদ্ধান্ত।
ক্রিকেট সফরের মাঝে বিজ্ঞাপনের কাজ করা যাবে না। কোনও শুট বা বিজ্ঞাপনের কোনও কাজ আর সফরের মাঝে করতে পারবে না ক্রিকেটারেরা। খেলা থেকে মনঃসংযোগ যাতে সরে না যায়, সেই কারণে এমন সিদ্ধান্ত।
৪৫ দিনের বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে দু’সপ্তাহের বেশি সময় থাকতে পারবেন না পরিবার-পরিজন। ক্রিকেটারদের সঙ্গী এবং সন্তানদের (১৮ বছরের নীচে) এক বারের জন্যই আসতে দেওয়া হবে। এলেও দু’সপ্তাহের বেশি থাকতে পারবেন না। এই সময়ের সব খরচ বোর্ড দেবে। যদি কোনও কারণে কেউ বেশি দিন থাকেন, তা হলে সেই খরচ ক্রিকেটারকে দিতে হবে। কোচ, অধিনায়ক এবং ম্যানেজারদের ঠিক করে দেওয়া দিনেই শুধুমাত্র পরিবারের লোকজন আসতে পারবেন। ব্যতিক্রম হলে আগে থেকে জানাতে হবে। ক্রিকেটারদের পরিবার বাদ দিয়ে অন্য কাউকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেবে না বোর্ড।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিভিন্ন শুট এবং বিজ্ঞাপনের কাজে ক্রিকেটারদের থাকতে হবে। বোর্ডের অনুষ্ঠানেও তাঁদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। ক্রিকেটের প্রসারের জন্য এটা জরুরি।
ম্যাচ আগে শেষ হয়ে গেলেও ক্রিকেটারদের থাকতে হবে। যত দিন না সফর শেষ হচ্ছে, তত দিন ক্রিকেটারদের থাকতে হবে। আগে চলে আসা যাবে না। দল কাউকে বাড়তি সুবিধা দিতে রাজি নয়। সেই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy