—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পাসপোর্ট পেতে জন্মের ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়ার একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সেই কারণে জেলা গোয়েন্দা দফতর (ডিআইবি) ছাড়াও সংশ্লিষ্ট থানাকে পাসপোর্টের নথি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার সায়ক দাস। খাগড়াগড় ছাড়াও, জেলার বেশ কয়েকটি এলাকাকে বিশেষ নজরে রাখতে চাইছে জেলা পুলিশ। প্রতিটি থানাকে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “জাল শংসাপত্রের তদন্ত আরও গভীরে গিয়ে করতে চাইছি। পাসপোর্টের নথি দু’বার খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলা পুলিশের দাবি, সব সময় এনআইএ বা রাজ্য পুলিশের এসটিএফ-এর নজর থাকে খাগড়াগড়ে। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন থানা ও জেলা গোয়েন্দা দফতরকে বেশ কয়েকটি এলাকা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওই সব এলাকায় নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। সেখানে কারা যাতায়াত করছেন, সে দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যে একের পর এক জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। নদিয়া-মুর্শিদাবাদ-উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকা থেকে ধরা হয়েছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। একই সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানেও জাল নথি দিয়ে পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টার অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সবের প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশ নিরাপত্তায় কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। সেই কারণেই পুলিশ সুপারের ওই নির্দেশ বলে জানাচ্ছেন এক পুলিশ আধিকারিক। জেলা পুলিশের দাবি, খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ পরবর্তী সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জঙ্গি সন্দেহে কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। ছ’মাস আগে মঙ্গলকোটের এক যুবককে চেন্নাই থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করে পুলিশ। খাগড়াগড়-কাণ্ডে মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া, কৃষ্ণবাটি, কুলসুনো গ্রামের নাম জড়িয়েছিল। জেলা পুলিশের দাবি, রাজ্য পুলিশের এসটিএফ মেমারি, রায়না, মন্তেশ্বর ও কাটোয়া ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি জায়গা নজরে রাখে। তার পাশাপাশি বর্ধমান শহর, কাটোয়া শহর, আউশগ্রাম, গলসি, কালনা শহর, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কয়েকটি জায়গায় ‘সুসংহত’ ভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে খবর সংগ্রহের পাশাপাশি, সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা ওই সব এলকায় টহল দিচ্ছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “কালনার হুগলি সীমান্ত, গলসি-আউশগ্রামের সীমান্ত, কেতুগ্রা-কাটোয়া-পূর্বস্থলীতে নদিয়া সীমান্ত নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে।” একই সঙ্গে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ‘লুকিয়ে’ থাকতে পারে, এই আশঙ্কায় জামালপুর-সহ কয়েকটি ব্লকে পুলিশ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
জেলা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানে জাল নথি দিয়ে পাসপোর্ট তৈরির ঘটনায় হুগলির তিন জন-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে হুগলির খানাকুলের ভাস্কর সামন্তকে চক্রের ‘মাথা’ বলে মনে করছে পুলিশ। তাঁর থেকে পাওয়া ল্যাপটপ, মোবাইল-সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম সাইবার-ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেগুলি ঘেঁটে জানা যাবে, জন্মের জাল শংসাপত্র কার কার কাছে গিয়েছে। কালনা থেকেও পুলিশ একই অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। বর্ধমান ও কালনার ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা পুলিশ খোঁজ নিয়ে দেখছে।
জন্মের জাল শংসাপত্র দিয়ে পাসপোর্ট বানানোর প্রবণতা জেলায় আগেও নজরে এসেছিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ভুয়ো শংসাপত্রের উৎস হুগলির বিভিন্ন এলাকা। হুগলি থেকে কয়েক জন পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছিল। জেলায় ছড়িয়ে থাকা এজেন্টদের ধরেছিল পুলিশ। সেই কারণেই জেলা পুলিশ জাল নথি চক্রের তদন্ত ‘গভীরে’ গিয়ে করতে চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy