জে পি নড্ডা আসার আগে সাজ সাজ রব বর্ধমান শহরে। রাস্তা সেজেছে বিজেপির পতাকায়, তোরণ-ফ্লেক্স রাজপথে। ছবি: উদিত সিংহ।
সম্প্রতি ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সে রকম কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না হয়, সে জন্য নিরাপত্তা আর সুরক্ষা বলয়ে বর্ধমান শহরকে বেঁধে ফেলছে জেলা পুলিশ। আজ, শনিবার বর্ধমান শহরে তিনি ‘রোড-শো’ করবেন। তার আগে কাটোয়ার মুস্থুলিতে সভা করবেন নড্ডা। সেখানেও পুলিশ মুড়ে ফেলেছে এলাকা।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়ার জগদানন্দপুর ও বর্ধমানের বামচাঁদাইতলায় হেলিপ্যাড করা হচ্ছে। সেখানে সিসি ক্যামেরা থাকার কথা। জগদানন্দপুরে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ অধিগৃহীত রাধাগোবিন্দ মন্দিরে প্রথমে যাওয়ার কথা নড্ডার। মন্দির চত্বর ছাড়াও, মুস্থুলি গ্রামের যে বাড়িতে তিনি দুপুরে খাবেন, যাঁদের বাড়ি থেকে ধান ও আনাজ সংগ্রহ করবেন, সেখানেও নজর থাকবে পুলিশের।
শুক্রবার কাটোয়া গিয়ে সভাস্থল থেকে শুরু করে সব জায়গা ঘুরে দেখে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান গ্রামীণ) ধ্রুব দাস। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মন্দির ও বাড়িগুলিতে যাতে ভিড় না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, ওই সব বাড়িগুলিতে কারা থাকবেন, তার তালিকাও বিজেপিকে দিতে বলা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান ও কাটোয়া দু’টি জায়গাতেই এসপি পদমর্যাদার কর্তারা দায়িত্বে থাকবেন। তাঁদের নীচে থাকবেন চার জন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি)। বর্ধমান শহরের রোড-শো সামলাতে ১২জন ডিএসপি আর কাটোয়ার ক্ষেত্রে আট জন ডিএসপি থাকবেন। এ ছাড়া, পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বর্ধমানে ১২টি ও কাটোয়ায় আটটি ‘সেক্টর’ করা হচ্ছে। রাস্তার ধারের বাড়িগুলির ছাদেও পুলিশ থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
বর্ধমানের বামচাঁদাইতলার হেলিপ্যাড থেকে দলের জেলা (বর্ধমান সদর) কার্যালয়ে বিশ্রাম নেবেন ও বৈঠক করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সেখানেও সিসি ক্যামেরা ও পুলিশের টহলদারি থাকবে। তবে কালীবাজার মোড় থেকে সর্বমঙ্গলা মন্দির যাওয়ার পথে গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলা হয়েছে। পুলিশের দাবি, রাস্তাটি সরু হওয়ায় যানজটের সম্ভাবনা রয়েছে। সে জন্য জে পি নড্ডার গাড়ির সঙ্গে শুধুমাত্র ভিআইপিদের গাড়ি ছাড়ার কথা ভাবা হয়েছে। বিজেপির দাবি, বীরহাটার ঘড়ি মোড় থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত ৭০০ মিটার রাস্তায় রোড-শো করবেন নড্ডা।
জগদানন্দপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, হেলিপ্যাড চত্বরের চারপাশে বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছে। কয়েকহাত দূরে রাধাগোবিন্দ মন্দির সেজেছে ফুলে। মন্দির কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভামুখী রাস্তা ঢেকেছে হাজার-হাজার দলীয় পতাকায়। বর্ধমান শহরে জিটি রোডের উপরে বীরহাটা থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত পাঁচটি গেট করা হয়েছে। ‘আর নয় অন্যায়’ ফ্লেক্স, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দলের জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীদের বড় বড় কাটআউট রয়েছে।
এ দিন সকালে বিজেপি নেতা অরবিন্দ মেনন, সন্দীপ নন্দী, বর্ধমানের কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ওই পথ ঘুরে দেখেন। বেরিয়ে থাকা গাছের ডাল কাটার কথা বলা হয়। বীরহাটায় বাঁকা নদীর উপরে দু’টি সেতু রয়েছে। বাঁ দিকের সেতুটি যাতে ফাঁকা থাকে, তা দেখার জন্যও কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। নেতাদের দাবি, ‘‘বোলপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পথসভার মতো এখানেও প্রত্যাশা ছাড়িয়ে ভিড় হবে। শুধু জেলার মানুষই রোড-শোয়ে যোগ দেবেন।’’ তাঁদের দাবি, কাটোয়ার সভায় এক লক্ষ আর বর্ধমানে ৯০ হাজার মানুষের ভিড় হবে।
রবিবার এই ‘রোড-শো’য়ের পাল্টা সভা করার কথা যুব তৃণমূলের। রাজ্য যুব-র সহ-সভাপতি সোহম চক্রবর্তীকে সামনে রেখে ওই মিছিল হবে। জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার এ দিন বলেন, “রবিবারের সভায় মানুষের ঢল নামবে। রাজ্য বিজেপিকে মোকাবিলা করতে জেলা যুব তৃণমূলই যথেষ্ট, সেটা প্রমাণ হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy