পূর্বস্থলীতে বোনা মেখলা। নিজস্ব চিত্র।
এক সময় ব্যাপক কদর থাকলেও এখন ভাটা পড়েছে কালনার টাঙাইল শাড়ির চাহিদায়। তাঁতিদের দাবি, অতিমারির পর থেকে হাতে বোনা শাড়ির বাজারও অনেকটাই দখল করে নিয়েছে পাওয়ারলুমে তৈরি তুলনায় সস্তার শাড়ি। তাঁতিদের বড় অংশ চলে গিয়েছেন অন্য পেশায়। বন্ধ হয়েছে বহু তাঁতঘর। শিল্পের এই কঙ্কালসার দশায় কিছুটা অক্সিজেন জোগাচ্ছে অসমের ঐতিহ্যবাহী পোশাক মেখলা। তাঁতিদের দাবি, শাড়ির আদলের এই পোশাকটি বুনে মজুরিও মিলছে ভাল।
সমুদ্রগড়, নসরৎপুর, ধাত্রীগ্রাম, শ্রীরামপুর-সহ তাঁত অধ্যূষিত এলাকায় তৈরি টাঙাইল শাড়ির এক কালে রমরমা বাজার ছিল। তবে এখনঅনেকেই মেখলা বোনায় মন দিয়েছেন। অসমের এই পোশাকে সাধারণত তিনটি অংশ থাকে। র্যাপার, ওড়না ও ব্লাউজ। তাঁতিদের দাবি, এলাকার তাঁতের শাড়ি ১২ হাত বুনতে হত। মেখলা হয় ৮ থেকে ১০ হাতের। পরে এ থেকেই র্যাপার ও ওড়না কাটা হয়। সঙ্গে দিতে হয় ২ হাত কাপড়ের ব্লাউজের পিস। তাঁতের শাড়ির বহর হয় ৪৯ থেকে ৫০ ইঞ্চি। সেখানে মেখলার বহর হয় ৪০ ইঞ্চি।
তাঁতিরা জানান, অসমের মহাজনদের মারফত মিলছে ভাল পরিমাণে মেখলা বোনার বরাত। তাঁরা সুতো দিলে শুরু হয় বোনা। সাধারণ তাঁতেও এই শাড়ি বোনা যায়। তৈরির পরে অসমের গুয়াহাটি-সহ বিভিন্ন এলাকার মহাজনেরা শাড়ির মজুরি দিয়ে নিয়ে চলে যান। একটি টাঙাইল বুনতে সময় লাগে এক দিন। সেখানে এক একটি মেখলা বুনতে সময় লাগে মাত্র পাঁচ থেকে ছ’ঘণ্টা।
শ্রীরামপুর এলাকার তাঁত শিল্পী তপন বসাক, শিবু বসাকেরা বলেন, “টাঙাইল বুনলেও সে শাড়ি বিক্রি হয় লোকসানে। এলাকার শাড়ি নিজেরা বুনলে মেরে কেটে ১৩০ টাকা থাকে। সেখানে মেখলা বুনে মিলছে প্রায় ৩৪০ টাকা।” নসরৎপুরের তাঁত শিল্পী অমিয় বসাক বলেন, “এক আত্মীয়ের মারফত অসমের এই শাড়ি বোনার বরাত পাই। যত দিন যাচ্ছে বরাত বাড়ছে। ভিন্ রাজ্যের শাড়ি বুনে ফের তাঁত শিল্পের সোনালি অতীত খোঁজার চেষ্টা করছি।”
কালনার তাঁতিদের মেখলা বোনার কথা জানেন মহকুমা হ্যান্ডলুম অফিসার রঞ্জিত মাইতি। তিনি বলেন, “তাঁত অধ্যূষিত এলাকাগুলিতে এই পোশাক অনেকে বুনছেন বলে জেনেছি। অসমের উত্তরীয়ও অনেকে বুনছেন। এখানকার শাড়ির তুলনায় বেশি মজুরিও পাচ্ছেন তাঁতিরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy