ডান দিকে, রায়নার গ্রামে বিধায়ক নিজস্ব চিত্র
আবাস প্রকল্পের নানা অভিযোগের তদন্তে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানে এসেছে কেন্দ্রের অনুসন্ধান দল। এ দিনই প্রকল্পে নাম না ওঠা নিয়ে কয়েকজনের প্রশ্নের মুখে পড়েন রায়নার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেলে জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা-সহ প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন অনুসন্ধান দলের দুই সদস্য। আজ, বুধবার থেকে গ্রামে গিয়ে আবাস প্রকল্পের পরিস্থিতি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন বলে বৈঠকে জানিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রদ্যুম্ন কর ও মনোজ পন্থের নেতৃত্বে কেন্দ্রের অনুসন্ধান দলটি সাড়ে ১১টা নাগাদ বর্ধমানের সার্কিট হাউসে পৌঁছয়। বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ জেলাশাসক-সহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা বৈঠক করেন তাঁরা। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আবাস প্রকল্পের মূল তালিকা, সেখান থেকে কত জন অনুপযুক্ত হয়েছেন, সেই সব তথ্য নেওয়া হয়। তাঁরা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, অনুপযুক্ত আর যোগ্যদের তালিকা ঠিক মতো তৈরি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। এ ছাড়াও বিশেষ কিছু অভিযোগ কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতরের মেলে এসেছে, সেগুলিও তাঁরা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। জেলা প্রশাসনের তরফে অনুসন্ধান দলকে জানানো হয়, তাঁদের কাছেও কিছু অভিযোগ এসেছে, সেগুলিও খতিয়ে দেখা যেতে পারে। ওই দল যদিও তাঁদের কাছে থাকা অভিযোগগুলিই খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মেমারি ২ ও গলসি ১ ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতের এগজ়িকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্টদের (ইএ) সঙ্গেও বৈঠক চলাকালীন অনুসন্ধান দলের সদস্যেরা কথা বলেন। মেমারি ২ ব্লকের দুটি পঞ্চায়েতের ‘ইএ’ হাজির ছিলেন না কেন, সেই প্রশ্ন তোলা হয়। বৈঠক শেষে অনুসন্ধান দলের এক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমরা এখনও গ্রামে যাইনি। সে জন্য কোনও কিছু বলব না।’’
এ দিন ‘দিদির দূত’ হয়ে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র, রায়নার বহরমপুর গ্রামে বাড়ি-বাড়ি ঘোরার সময়ে আবাস-প্রকল্পে বাড়ি পাওয়া গেল না কেন, সেই প্রশ্নের মুখে পড়েন শম্পা। তাঁকে ঘিরে কয়েকজন মহিলা বলেন, ‘‘ঘরও নেই। আমাদের নামও ওঠেনি তালিকায়।’’ পাড়া-বৈঠক চলাকালীনও অনেকে বাড়ি পাওয়া নিয়ে অভিযোগ করেন। বিধায়ক তাঁদের বলেন, ‘‘পাকা বাড়ি থাকলে টাকা পাওয়া যাবে না। টাকা ঢুকে গেলেও ফেরত দিতে হবে।’’ রায়না ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বামদেব মণ্ডলের দাবি, ‘‘এমন কিছু নাম মিলেছে, যেগুলি সম্পর্কে বিধায়ক ওয়াকিবহাল। যাঁদের পাকা বাড়ি, ১০-১৫ বিঘা জমি রয়েছে, সেই সব নাম আমাদের দেওয়া নয়। নামগুলি এল কী ভাবে, বুঝতে পারছি না।’’
নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ মহম্মদ ইসমাইল আবার ক্ষোভ সামলাতে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি, আশাকর্মীদের ভুলেই অনেকের নাম বাদ গিয়েছে বলে জানতে পারছি। তবে চিন্তার কিছু নেই। পরবর্তী সময়ে ওই সব প্রাপকরা যাতে আবাস-প্রকল্প থেকে টাকা পান, তার চেষ্টা করা হবে।’’ উপপ্রধানের মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের পূর্ব বর্ধমানের সম্পাদিকা ঝর্ণা পাল। তাঁর দাবি, ‘‘নিয়ম-নীতি মেনে সরকারের নির্দেশে সমীক্ষা করা হয়েছে। তার পরেও এই ধরণের মন্তব্য অত্যন্ত উদ্বেগের। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টিজানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy