আলো নেই রেল উড়ালপুলে। —নিজস্ব চিত্র।
শহরবাসীকে যানজট থেকে রেহাই দিতে তৈরি হয়েছে রেল উড়ালপুল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেলগেটে আটকে থাকা থেকে মুক্তি মিলেছে। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই সমস্যায় পড়ছেন মোটরবাইক, সাইকেলের আরোহী ও পথচারীরা। কারণ, উড়ালপুলের উপরে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। নেই ফুটপাথও। উড়ালপুলের পাশে তিনটি ‘হাই মাস্ক’ আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু, দীর্ঘ দিন ধরে দু’টি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে, সমস্যা মেটেনি।
দুর্গাপুর পূর্ব রেলগেটে যানজট ছিল নিত্য ঘটনা। সারা দিনে প্রচুর এক্সপ্রেস, মেল, লোকাল ট্রেন এবং মালগাড়ি যাতায়াত করে এই লাইন দিয়ে। আবার এই রাস্তা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুরের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত বাস, লরি-সহ নানা যানবাহনকে। দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে ২০০৭ সালে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে এখানে রেল উড়ালপুলের কাজ শুরু হয়। ঠিক হয়, লাইনের উপরের কাজ করবে রেল। সেতুর দু’দিকের রাস্তা তৈরি করবে রাজ্যের পূর্ত দফতর। ২০১৩ সালে এই উড়ালপুলটি চালু হওয়ার পরে দুর্গাপুরের এই অংশ যানজটমুক্ত হয়েছে। কিন্তু, সমস্যায় পড়েছেন পথচারী থেকে সাইকেল ও মোটরবাইক আরোহীরা।
এলাকাবাসী জানান, রেল উড়ালপুলটি চালু হওয়ার পরে সেখানে আলো লাগানো হবে বলে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তিনটি ‘হাই মাস্ক’ আলোর স্তম্ভও লাগানো হয়েছে— মুচিপাড়া, বাঁকুড়া মোড়ের দিকে ও উড়ালপুলের মাঝামাঝি জায়গায়। প্রতিটি স্তম্ভে বেশ কয়েকটি করে আলো জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন মাত্র একটি স্তম্ভেরই আলো জ্বলে বলে জানান বাসিন্দারা। দু’টি স্তম্ভ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। উড়ালপুলের দু’দিকে ঘোর অন্ধকার। শহরের বাসিন্দা সুকুমার সিংহ বলেন, ‘‘মোটরবাইক নিয়ে যাওয়ার সময়ে সামনের দিক থেকে কোনও বড় গাড়ির আলো চোখে পড়লে আর কিছু দেখা যায় না। বাইকের সামনে কেউ চলে এলেও অনেক সময় বুঝতে পারি না। এমনিতেই পাশে কোনও জায়গা থাকে না। তার উপরে আলো না থাকায়, সমস্যা আরও বাড়ে।’’
সমস্যা আরও বেড়েছে উড়ালপুলে কোনও ফুটপাথ না থাকায়। সাইকেল বা রিকশা নিয়েও অনেকে উড়ালপুলের উপর দিয়ে যান। কোনও ফুটপাথ না থাকায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, উড়ালপুল দিয়ে দিনরাত বালির লরি, ডাম্পার আসা-যাওয়া করছে। সেখান থেকে সব সময় বালি পড়ে উড়ালপুল বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। ফুটপাথের দাবিতে বেশ কয়েক বার বিক্ষোভও দেখিয়েছেন শহরের বাসিন্দারা। কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি।
পূর্ত দফতরের তরফে অবশ্য সাফ জানানো হয়েছে, রেল উড়ালপুলের নকশা তৈরির সময়ে সেখানে ফুটপাথের কোনও অনুমোদন ছিল না। তাই তা তৈরি করা হয়নি। দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে বলে অনেকে আমাদেরও জানিয়েছেন। সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy