Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
bengal flood

Bengal flood: বৃষ্টিতে ক্ষতি সেতু-রাস্তারও, পরিদর্শন

নতুন করে অবস্থার অবনতি না হলে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমির চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা কৃষি-কর্তাদের।

বাঁ দিকে, রায়নায় খেতে জমে জলে। ডান দিকে, পরিদর্শনে নেতা-মন্ত্রীরা। বৃহস্পতিবার।

বাঁ দিকে, রায়নায় খেতে জমে জলে। ডান দিকে, পরিদর্শনে নেতা-মন্ত্রীরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কালনা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২১ ০৬:০৮
Share: Save:

টানা বৃষ্টি ও বেশ কিছু নদী উপচে পড়ায় জেলার বহু এলাকায় জল জমেছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে ধান ও আনাজের চাষ। বৃহস্পতিবার জেলার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হল বর্ধমানে। পরে, রায়নার দু’টি ব্লকের পরিস্থিতি নিয়ে আলাদা বৈঠক হয়। রায়নায় পরিস্থিতি পরিদর্শনেও যান মন্ত্রী ও আধিকারিকেরা।

বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকে এ দিন ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী তথা জেলার বিধায়ক স্বপন দেবনাথ ও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, হাজির ছিলেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, জেলা কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ প্রশাসনের কর্তারা। জেলা প্রশাসন সূত্রের হিসেব অনুযায়ী, জল জমার জেরে ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার ১২টি ব্লক ও তিনটি পুরসভা এলাকায় ৫,৪৪৭ জন মানুষ। ১৬৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ ও ৫০৪টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বেশ কিছু রাস্তা ও সেতুর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে চাষ-আবাদের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

কৃষি আধিকারিকেরা জানান, এ বার আমন চাষ হওয়ার কথা প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে। প্রায় ২ লক্ষ ৯৮ হাজার হেক্টর জমিতে তা শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন প্রায় ৯৮,৫৮০ হেক্টর ধানের জমিতে জল জমে রয়েছে। তবে কৃষি-কর্তারা জানান, জল জমা মানেই ধান চাষের ক্ষতি নয়। দ্রুত জল জমি থেকে বেরিয়ে গেলে, চাষের তেমন ক্ষতি হবে না। বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় জমি থেকে জল কমতে শুরু করেছে। তবে বিভিন্ন নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকায় ধান চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন করে অবস্থার অবনতি না হলে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমির চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা কৃষি-কর্তাদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বীজধান বিলি করা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। তবে কৃষি দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, যে প্রক্রিয়ায় বীজ আসবে, তা বিলি করতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। বরং, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা প্রয়োজনে বিভিন্ন কৃষি খামার থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন। পূর্ব বর্ধমানের কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৬-৭ দিন ধানের জমিতে জল জমে থাকলেও তেমন ক্ষতি হয় না। তার ভিত্তিতেই আমাদের অনুমান, ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের ক্ষতি হতে পারে। জল কমে গেলে ঠিক হিসেব পাওয়া যাবে।’’ তাঁর দাবি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই একশো শতাংশ জমিতে আমন চাষ হবে।

বর্ধমানে বৈঠকের পরে, দুই মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের কর্তারা রায়নার দু’টি ব্লকের পরিস্থিতি নিয়ে আলাদা বৈঠক করেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রায়না ২-এর বিডিও অনিশা যশ বৈঠকে জানান, ব্লকে প্রায় দু’হাজার হেক্টর চাষের জমিতে জল জমে রয়েছে। ৩৫ হেক্টর পুকুরের জল উপচে ৭০ টন মাছ নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া, সিমলাপুর থেকে কবিকঙ্কন যাওয়ার পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার খারাপ হয়েছে, জলে তলিয়ে গিয়েছে উচালনের শ্মশানের চুল্লি, নদী সেচ প্রকল্প। ভারী বৃষ্টিতে বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমানের সংযোগকারী মিলন সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। বিডিও আরও জানান, বড়বৈনান এলাকায় পদ্মদহ বলে একটি এলাকা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো হয়ে রয়েছে। সেখানে সেতুর প্রয়োজন। রায়না ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অনেক জমি থেকে জল নেমে গিয়েছে। চাষিরা ফের বীজতলা তৈরি করছেন। যে জমিগুলি জলমগ্ন রয়েছে, সেগুলিতে ক্ষতিপূরণের দাবি উঠেছে। রায়নার বড়পলাশন, নতুবালাসরে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ও নানা এলাকায় বেশ কিছু রাস্তা সংস্কারের দাবি ওঠে।

বৈঠকের পরে, মিলন সেতু পরিদর্শনে যান মন্ত্রী স্বপনবাবু ও আধিকারিকেরা। স্বপনবাবুর আশ্বাস, সেতুর বিষয়গুলি জেলা প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বৈঠক করা হয়েছে। জল জমার পরিস্থিতিতে জেলায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ এবং ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রায়নায় চারটি পরিবার ছাড়া, এখন আর কেউ ত্রাণ শিবিরে নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

flood bengal flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy