‘আক্রান্ত’ নিজস্ব চিত্র
তাদের দল করায় বারাবনিতে একটি পরিবারের সদস্যদের মারধর করেছে তৃণমূল, এমনই অভিযোগ করেছে বিজেপি। পরিবারটির দাবি, তাদের বাড়ির ছ’জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক মহিলা-সহ তিন জনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ‘প্রহৃত’ পরিবারটি বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। এলাকায় পুলিশ টহল রয়েছে। এ দিকে, ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই, পুরোটাই পারিবারিক বিবাদ— এমনই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
ঘটনাস্থল, পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি ব্লকের জামগ্রাম পঞ্চায়েতের খড়াবর গ্রাম। ঘটনার সূত্রপাত, বুধবার বিকেলে স্থানীয় একটি পুকুর থেকে জল তোলাকে কেন্দ্র করে। আক্রান্ত ওই পরিবারটির সদস্য বৃন্দাবন বাউড়ি পুলিশকে জানিয়েছেন, বিকেলে বাড়ির কয়েক জন মহিলা পুকুর থেকে জল আনতে গিয়েছিলেন। সে সময় পড়শি কয়েক জনের সঙ্গে তাঁদের কথা কাটাকাটি হয়। তখনকার মতো বিষয়টি মিটেও যায়। বৃন্দাবনের অভিয়োগ, “আচমকা রাত প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ এক দল দুষ্কৃতী বাড়িতে হামলা চালায়। গালিগালাজ করে। পরিবারের লোকজনকে বাড়ি থেকে টেনে এনে, লাঠি, লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। দুষ্কৃতীরা সবাই এলাকায় তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত। বিজেপি না ছাড়লে আমাদের উপরে এ ভাবেই হামলা হবে, এমন হুমকিও দেয় ওরা।” তবে ‘ওরা’ কারা, তা বিকেল পর্যন্ত ভাঙেননি বৃন্দাবন।
এ দিকে, অশান্তির খবর পেয়ে স্থানীয় কয়েক জন ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের থেকে খবর পেয়ে এলাকায় বারাবনি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ‘হামলাকারীরা’ চম্পট দেয়। পুলিশ জানায়, জখম ছ’জনকে উদ্ধার করে কেলেজোড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে, তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এক মহিলা-সহ তিন জনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
কিন্তু পুলিশে অভিযোগ জানানো হল না কেন? বৃন্দাবনের কথায়, “আমরা অভিযোগ করব। এখন জখম পরিবারের সদস্যদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি।”
এ দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বারাবনির বিজেপি নেতা অরিজিৎ রায়ের অভিযোগ, “শুধু বিজেপি করার অপরাধেই এই হামলা চালিয়েছে তৃণমূল।” বিজেপির বারাবনি ২ নম্বর মণ্ডল সভাপতি সাধন রাউথের দাবি, “জামগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাটি আমাদের শক্ত ঘাঁটি। বছরখানেক পরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই বেছে-বেছে, বিজেপি সমর্থক পরিবারগুলির উপরে সংগঠিত হামলা চালিয়ে সংগঠনকে দুর্বল করতে চাইছে তৃণমূল।” বিজেপি নেতৃত্বের আরও দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়, এই পরিবারের এক মহিলা সদস্য দলের হয়ে ভোটে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। তখনও হামলা হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, ২০২০-তে এই খড়াবর এলাকায় বিজেপির উদ্যোগে আয়োজিত একটি মিছিলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল। সে বারও বোমবাজি থেকে অগ্নি-সংযোগ কোনও কিছুই বাদ যায়নি।
যদিও দলের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের বারাবনি ব্লক সভাপতি অসিত সিংহ বলেন, “একেবারেই ভিত্তিহীন অভিযোগ। এটি সম্পূর্ণ ভাবে পারিবারিক বিবাদ। আমরা এই ঘটনার পুলিশি তদন্ত দাবি করছি। সত্য প্রকাশ পাবে।” তৃণমূলের অন্যতম জেলা সম্পাদক অভিজিৎ ঘটকেরও দাবি, “বারাবনিতে বিজেপির কোনই সংগঠন নেই, লোকসভা উপনির্বাচনে তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল হামলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy