Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
টাস্কফোর্স গড়ল পুলিশ-ইসিএল

খনির পাশে কয়লা চুরি, রুখতে হিমসিম

কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় বেআইনি খনন তো আছেই। কখনও কখনও বৈধ খনি থেকেই কয়লা কেটে নিচ্ছে চোরেরা। খনি অঞ্চলে এমন সমস্যা বাড়তে থাকায় কপালে ভাঁজ পড়েছে ইসিএলের। সংস্থার কর্তাদের দাবি, নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীকে দিয়ে অভিযান চালিয়ে তেমন ফল মিলছে না।

শিল্পাঞ্চলের নানা এলাকায় এমন চিত্র নিত্য দিনের। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

শিল্পাঞ্চলের নানা এলাকায় এমন চিত্র নিত্য দিনের। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ০১:২৫
Share: Save:

কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় বেআইনি খনন তো আছেই। কখনও কখনও বৈধ খনি থেকেই কয়লা কেটে নিচ্ছে চোরেরা। খনি অঞ্চলে এমন সমস্যা বাড়তে থাকায় কপালে ভাঁজ পড়েছে ইসিএলের। সংস্থার কর্তাদের দাবি, নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীকে দিয়ে অভিযান চালিয়ে তেমন ফল মিলছে না। সম্প্রতি গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে বৈঠক করে ইসিএল। সেখানে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে কয়লা চুরি রোখা ও ইসিএলের এলাকায় দখলদারি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়।

ইসিএল কর্তাদের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা কখনও সংস্থার বৈধ খনি থেকে কয়লা তুলে নিচ্ছে। আবার কখনও ইসিএলের লিজ হোল্ড এলাকায় অবৈধ কুয়ো খাদান তৈরি করে খনন করছে। এই চুরি বন্ধ করতে ইসিএল কর্তৃপক্ষ একাধিক বার শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ) বা নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন। কিন্তু সেই একক অভিযানে বিশেষ ফল না মেলায় পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তারা। ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এ কে সিংহ বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছি। কয়লা চুরি বন্ধে এই ফোর্স যৌথ অভিযান চালাবে।’’

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সালানপুরের বনজেমাহারি ও মোহনপুর কোলিয়ারি, বারাবনির খয়রাবাঁধ, দিঘলপাহাড়ি, সরিষাতলি, রসুনপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি কয়লা চুরি হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা এই সব এলাকায় অন্তত হাজারখানেক অবৈধ খাদান বানিয়ে অবাধে কয়লা লুঠ করছে বলে অভিযোগ। সালানপুর এরিয়ার জিএম দাবি করেন, প্রতি দিন কয়েকশো সাইকেল, মোটরবাইকে বস্তা বোঝাই করে চোরাই কয়লা পাচার হচ্ছে। গরুর গাড়িতে করেও অবৈধ খাদানের কয়লা পাচার হচ্ছে। অবৈধ খাদানগুলিতে নেমে মানুষের মৃত্যুও হচ্ছে। সম্প্রতি বারাবনির সরিষাতলি জঙ্গলে এ রকমই একটি খনিতে ধসে বেশ কয়েক জন চাপা পড়েন বলে এলাকাবাসীর দাবি। পুলিশ অবশ্য এক জনের দেহ উদ্ধার করে।

ইসিএল সূত্রে জানানো হয়েছে, শুধু কয়লা চুরি রোখা নয়, সংস্থার এলাকায় অবৈধ দখলদার উচ্ছেদেও উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে এই টাস্ক ফোর্স। জিএম এ কে সিংহ জানান, সালানপুরের ডাবর, বনজেমাহারি, মোহনপুর, পাহাড়গোড়া এলাকায় ইসিএল অধ্যুষিত অঞ্চলে খনি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও সেই কাজ শুরুও হয়েছে। কিন্তু তাতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ইসিএলের জমি জবরদখল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘যাঁরা জমি দখল করে আছেন তাঁরা প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে চোরাই কয়লার কারবারে জড়িত। তাঁদের হঠাতে না পারলে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কয়লা চুরির রমরমা ঠেকানো যাবে না। আমরা একাধিক বার এই দখলদার তোলার চেষ্টা করেছি। পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান হলে ফল আরও ভাল মিলবে।’’

ভোটের আগে সালানপুরে এই দখল উচ্ছেদ করতে গিয়ে ইসিএলের নিরাপত্তা বাহিনী এবং সিআইএসএফ কর্মীরা বিক্ষোভের মুখে পড়েন। সেই সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে পুলিশও পিছু হঠে। তার পরে ইসিএল কর্তৃপক্ষ সেই কাজে আর এগোয়নি। কর্তৃপক্ষের ধারণা, এ বার পুলিশকে নিয়ে গঠিত টাস্ক ফোর্সের সাহায্যে সহজেই দখলদার মুক্ত করা যাবে। কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বজিৎ মাহাতা বলেন, ‘‘পুলিশ ইসিএলকে সর্বতো ভাবে সাহায্য করবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Police-ECL coal theft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE