প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার উজিয়ে রায়নার সাঁকটিয়া থেকে বিচারের আশায় বর্ধমান জেলা আদালতে এসেছিলেন ৮২ বছরের সন্তোষ দাসগুহ।এসে শুনলেন, আইনজীবীরা আদালত বয়কট করেছেন। বৃদ্ধের ক্ষোভ, “কবে থেকে একের পরে এক তারিখ পড়ছে। তার উপরে উকিলেরা বয়কট করছেন। আমাদের কষ্ট কি কেউ বুঝবে না?’’
মঙ্গলবার থেকে চার দিন জেলা আদালত বয়কটের ডাক দিয়েছে বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশন। আইনজীবীদের একাংশ জানান, শনিবার থেকে চার দিন সরকারি ছুটি রয়েছে। ১৫ অগস্টের পরেও আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হবে কি না, তা নিয়ে তাঁদের সন্দেহ রয়েছে।
প্রায় দেড় মাস ধরে সিজিএম (চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) সঞ্জয়রঞ্জন পাল ও দেওয়ানি আদালতের (সিনিয়র ডিভিশন) বিচারক মন্দাক্রান্তা সাহার বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বয়কট করছিলেন আইনজীবীরা। ভারপ্রাপ্ত বিচারকেরা শুনানিতে এলেও ২৫ জুলাই থেকে ওই দুই বিচারকের এজলাস পুরোপুরি বয়কট করা হয়। জেলা জজ বিভাসরঞ্জন দে বেশ কয়েকবার আইনজীবীদের সঙ্গে বসে ভুল বোঝাবুঝি মেটানোর কথা বলেন। ওই দুই বিচারকও এজলাসে এসে আইনজীবীদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করার কথা বলেন। তারপরেও সোমবার বিকেল থেকে জেলা আদালত বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় বার অ্যাসোসিয়েশন।
এ দিন মঙ্গলকোটের ইছাবটগ্রাম থেকে জন্মের শংসাপত্র এফিডেভিট করাতে আদালতে এসেছিলেন বিপ্লব চক্রবর্তী। সে কাজ হয়নি। বিপ্লববাবুর ক্ষোভ, “কিছু লোকের জন্য সবার হয়রানি!” বর্ধমানের লক্ষ্মীপুরের ললিতা মণ্ডল বলেন, “অতিরিক্ত জেলা জজের আদালতে মঙ্গলবারই খোরপোশের মামলার মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। আমাদের ভোগান্তির কথা কেউ ভাববেন না?”
বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি প্রসঙ্গে বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা-র বক্তব্য, “অনেক বিচারপ্রার্থী ঠিকঠাক বিচার না পেয়ে জেলে থাকছেন। তাতে তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের হয়রানি হচ্ছে। আমরা নিজেদের ক্ষতি করে সেই সব বিচারপ্রার্থীদের জন্য লড়াই করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy