তৃণমূল নেতা বিকাশ চৌধুরীর বাড়ির সামনে, মণ্ডলহাটে। নিজস্ব চিত্র
‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে তিন তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ হয়েছে কাটোয়ার মণ্ডলহাটে। রবিবার বিক্ষোভকারী শ’খানেক বাসিন্দার অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়া বা শৌচাগারের তৈরির নামে কারও কাছে পাঁচ হাজার, কারও কাছে দশ হাজার টাকা নিয়েছেন খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সঞ্চালক বিকাশ চৌধুরী, ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজার অমল ঘোষ ও সুভাষ ঘোষ। যদিও ওই তিন নেতা অভিযোগ মানেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা পাপাই দেবনাথ, সমীর দেবনাথদের দাবি, জঞ্জাল সাফাই থেকে রাস্তা সংস্কার কোনও কাজই পঞ্চায়েত ঠিক মতো করে না। তার উপর কারও কাছ থেকে দু’বছর, কারও কাছে তিন বছর আগে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তুলেছেন ওই নেতারা। মাসখানেক আগেও পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় জঞ্জাল সাফাই না করার অভিযোগে এই এলাকায় বিক্ষোভ হয়। বিজেপির স্থানীয় নেতা চঞ্চল মণ্ডলের দাবি, ‘‘খাজুরডিহি পঞ্চায়েত দুর্নীতিতে ডুবে আছে। বিকাশবাবুর স্ত্রী পুষ্প চৌধুরী প্রধান থাকাকালীন কাটমানির বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়।’’ যদিও বিকাশবাবুর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে। কাটমানি নেওয়ার কোনও জায়গা নেই।’’ দুই সুপারভাইজারও অভিযোগ মানেননি। ঘন্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভ তোলে। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে জানান। এ ভাবে বিশৃঙ্ক্ষলা তৈরি করে সমস্যার সমাধান হয় না।’’
মেমারি ১ ব্লকের দুর্গাপুরের জুজুটিগ্রামেও ‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে একশো দিনের কাজের সুপারভাইজারের বাড়িতে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীদের দাবি, ওই সুপারভাইজার রবিবার টাকা ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। এ দিন গিয়ে দেখা যায় বাড়িতে তালা। ওই গ্রামের তৃণমূল কর্মী শেখ মনসুরও তাঁর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে শনিবার রাতে মেমারি থানায় বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
ওই তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ও শনিবার সকালে তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছে। বাড়ি থেকে তাঁকে বার করে হেনস্থাও করা হয়, অভিযোগ। বিজেপি গত তিন ধরে দফায় দফায় ওই সুপারভাইজারের বাড়িতে হামলা করেছে বলেও তৃণমূলের দাবি। বিজেপির মণ্ডল কমিটির সদস্য সীমান্ত সোরেনের দাবি, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বাবদ ১০০ দিন প্রকল্প থেকে ৯০ দিনের টাকা পান উপভোক্তারা। সেই টাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে কাটমানি নিয়েছে সুপারভাইজার। শৌচাগার তৈরির টাকাও নিয়েছে।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের দাবি, “বিভিন্ন গ্রামে কাটমানি ফেরতের দাবিতে মানুষজনকে এক জায়গায় করার জন্যে প্রচার চলছে। কাটমানি ফেরত নিয়ে তবেই ছাড়ব।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, সম্প্রতি একটি বৈঠকে আপাতত প্রতিটি পঞ্চায়েতে দু’তিনজন মিলে একটি দল গঠন করা হয়েছে। তাঁরাই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটাবেন। মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত বা ব্লক অফিসে নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা দিতে বলা হবে। প্রশাসন তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy