সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কেন অনুমতি দিল রাজ্য সরকার? সেই প্রশ্ন তুলেই সিদ্দারামাইয়ার সরকারকে ভর্ৎসনা করল কর্নাটক হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের মন্তব্য, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির অনুমোদন দেওয়ার কোনও অধিকার নেই সরকারের! উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে মামলা চলছে।
বিচারপতি এম নাগপ্রসন্ন প্রশ্ন তোলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারধীন বিষয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির অনুমতি কী ভাবে রাজ্য সরকার দিতে পারে? একই সঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। ওয়াকফ আইন নিয়ে বাংলায় যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। শুনানিতে কর্নাটক হাই কোর্ট সেই বিষয়টা তুলে ধরেছে। প্রসঙ্গত, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে কর্নাটকে গত ১৫ এপ্রিল কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেই কর্মসূচির কথা ভেবেই ওই দিন গাড়িচালকদের একটি নির্দিষ্ট রাস্তা এড়িয়ে চলার বিষয় জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার। সেই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে কর্নাটক হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ম্যাঙ্গালুরুর বাসিন্দা এ রাজশেখর।
মামলার শুনানি চলাকালীন মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে বিষয়টি উত্থাপিত করে জানান, সরকারের এই ধরনের বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষুব্ধ তাঁর মক্কেল। যদিও রাজ্যের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, পুলিশ একটি ট্র্যাফিক পরামর্শ জারি করেছিল। ‘অবাধ যান চলাচল’ নিশ্চিত করতেই গাড়িচালকদের বিকল্প রাস্তার কথা জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাই কোর্ট। গাড়িচালকদের অন্য পথে যেতে বলার বিষয় নয়, রাজ্য সরকার কী ভাবে এই ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচির অনুমতি দিল, সেটাই বিচার্য। রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কর্মসূচির অনুমতি আইন মেনে দেওয়া হয়েছিল কি না। তা নির্দিষ্ট কোনও এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল কি না। আগামী ২০ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেই দিন রাজ্য সরকারের জবাব তলব করেছে হাই কোর্ট।
আরও পড়ুন:
নরেন্দ্র মোদী সরকারের ওয়াকফ সংশোধনী আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে অন্তত ৭২টি মামলা হয়েছিল। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলের সাংসদ, নেতারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। বিজেপিশাসিত বেশ কিছু রাজ্য আবার এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়েছিল। একযোগে সব মামলার শুনানি হচ্ছে দেশের শীর্ষ আদালতে।