চলছে রান্না। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালের এক তলার ছাদে বড় প্যান্ডেল টাঙানো হয়েছে। চতুর্দিকে রকমারি আলোর রোশনাই। সাজানো হয়েছে টেবিল, চেয়ার। এক দিকে আভেনে রান্নাও হচ্ছে। কিন্তু খাওয়াদাওয়ার আয়োজন যেখানে, সেখান থেকে কার্যত কয়েক পা দূরে হাসপাতালের দু’টি বিভাগ রয়েছে। কাটোয়া হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই ‘ভোজে’র বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন রোগীর পরিজনদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট চাওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে যেখানে এই খাওয়াদাওয়ার আয়োজন হয়েছিল, তার অদূরেই রয়েছে ‘হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট’ (এইচডিইউ) ও ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ (এসএনসিইউ)। বিষয়টি নিয়ে কেতুগ্রামের বাপন ঘোষ নামে এক রোগীর আত্মীয়ের দাবি, ‘‘রাত ৯টা নাগাদ হাসপাতালের এইচডিইউ ইউনিটের ছাদে প্যান্ডেলের ভিতর থেকে রান্নার শব্দ আসছিল। ভেসে আসছিল মাংস রান্নার সুবাস। কৌতূহলে কাছাকাছি যেতেই দেখি, ডাক্তার-সহ সবাই খাওয়াদাওয়ায় ব্যস্ত। পরে ওয়ার্ডে ঘিয়ে দেখি, কয়েকজন রোগীও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন।’’ বাপনবাবু-সহ আরও কয়েকজনের অভিযোগ, এ ভাবে রান্নার ফলে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। সেই সঙ্গে হাসপাতালের ভিতরে এ ভাবে ভোজের আয়োজন কতটা নিয়মসঙ্গত তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
যদিও হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল সাংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবি করেন, ‘‘আমার অফিসের পাশে তিন হাজার বর্গফুটের একটি ফাঁকা ছাদে খাবার বানানো হয়েছিল। সেখান থেকে কুড়ি ফুট দূরে এসএনসিইউ রয়েছে। তাই, আমাদের কাছে বিষয়টা বিপজ্জনক মনে হয়নি। পরে, এটা নিয়ে কথা উঠতে আমরা যাবতীয় আয়োজন ওখান থেকে সরিয়ে নিয়েছি।’’
কিন্তু কেন এই আয়োজন? হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ‘ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাশিওরেন্স প্রোগ্রাম’ (এনকিউএএস)-এর কাজ কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এসেছিল কেন্দ্রীয় প্রকল্পের একটি প্রতিনিধি দল। মূলত তাদের ‘জন্য’ এই খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। তবে সেখানে খেতে দেখা যায় হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশকেও। দায়িত্বপ্রাপ্ত কেটারিং সংস্থা সূত্রে জানা যায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই শতাধিক খাবারের প্যাকেট বানাতে বরাত দিয়েছিলেন। মেনুতে ছিল, সরু চালের ভাত, আনাজ, ডাল ও মাছ। কয়েকজনের জন্য ছিল, খাসির মাংস। সবার জন্য পাতে ছিল দু’টি করে রসগোল্লাও।
বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল বলেন, ‘‘হাসপাতালে রান্না হয়েছে কি না জানতে চেয়ে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কেন রান্না হয়েছে, কারা এই ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘আমিও বিষয়টি জানতে চেয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy