শেষমেশ বাতিলই হয়ে গেল দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর মনোনয়ন। ফলে, এই কেন্দ্রে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ নয়, বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীই তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে থাকছেন। মঙ্গলবার বিপ্রেন্দুবাবু বলেন, ‘‘মনোনয়ন কেন বাতিল করে দেওয়া হল তা খতিয়ে দেখার সময় এখন নয়। কংগ্রেসের প্রার্থীর সমর্থনে ঝাঁপা়তে চাই আমরা।’’
আসন সমঝোতায় কেন্দ্রটি কংগ্রেসকে ছাড়ার কথা জানানোর পরেও সোমবার দুর্গাপুর পশ্চিমে মনোনয়ন জমা দেন প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দুবাবু। কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়ালও সে দিনই মনোনয়ন জমা করেন। তবে বিপ্রেন্দুবাবুর প্রার্থিপদ বহাল থাকবে কি না, সে নিয়ে সে দিনই প্রশ্ন উঠেছিল। কারণ, তিনি নির্ধারিত সময়ের মিনিট দশেক পরে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া প্রার্থীকে দলের তরফে যে চিঠি জমা দিতে হয়, সেখানে অন্য কারও নাম কেটে বিপ্রেন্দুবাবুর নাম লেখা ছিল। গোটা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছিল মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। মঙ্গলবার মনোনয়ন পত্র পরীক্ষার পরে বিপ্রেন্দুবাবুর মনোনয়ন বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন।
এই কেন্দ্রে কে প্রার্থী দেবে, সে নিয়ে বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে গোড়া থেকেই টালবাহানা চলেছে। প্রথমে বিপ্রেন্দুবাবুর নাম ঘোষণা করেছিল বামেরা। পরে জানানো হয়, সেখানে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। সে নিয়ে আবার অসন্তোষ তৈরি হয় সিপিএমের একাংশের মধ্যে। ১৫ মার্চ কংগ্রেসের তরফে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে আইএনটিইউসি নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণার পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয় বলে সিপিএম সূত্রের খবর। শনিবার বিকেলে আবার প্রার্থী নিয়ে চমক দেয় কংগ্রেস। শহরের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে তারা প্রার্থী করছে বলে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়। বিশ্বনাথবাবু আগেই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়।
সোমবার বিপ্রেন্দুবাবুর মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে প্রার্থী নিয়ে টানাপড়েনে রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে বিপ্রেন্দুবাবুর নামে চিঠি আনতে দেরি হয়ে যায়। গোটা বিষয়টি কমিশনকে তাঁরা জানিয়েছেন বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার বিপ্রেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমার মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় বিরোধীদের উল্লাসের কিছু নেই। মানুষের চাহিদা মেনে আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে কংগ্রেস প্রার্থীকে জেতানোর জন্য ঝাঁপাব।’’ তাই যদি দলের সিদ্ধান্ত হয় তবে তিনি মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন কেন? দলের পক্ষ থেকেই তাঁর প্রার্থিপদকে সে ভাবে মান্যতা না দেওয়ার কারণেই কি পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়ে গিয়েছিল? বিপ্রেন্দুবাবুর জবাব, ‘‘দলের দিক থেকে কোনও ত্রুটি ছিল না। মনোনয়ন কেন বাতিল হল তা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে এখন আমরা কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে মন দিতে চাই।’’
জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমল হালদার শুধু বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ জোটের স্বার্থে এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থীর সমর্থনে আমাদের কর্মীরা রাস্তায় নামবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy