ফাঁকা কৃষ্ণসায়র জলাশয়।ছবি: উদিত সিংহ।
অন্য বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতেই পরিযায়ী পাখি দেখা যেত বর্ধমান শহরের কৃষ্ণসায়রে। এ বার জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পরেও দিঘি ফাঁকাই। প্রাতর্ভ্রমণে আসা লোকজন থেকে কৃষ্ণসায়রের কর্মী সকলের আক্ষেপ, পরিযায়ীদের জন্য দিঘির চেহারাটাই বদলে যায় প্রতিবার। এ বার শীতটাই অন্যরকম লাগছে।
কৃষ্ণসায়র পরিবেশ কাননেন কর্মীরা জানান, প্রতি বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত থাকে পরিযায়ীরা। সারাদিন জলের মধ্যে হাজার হাজার পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত থাকে পরিবেশ উদ্যান। পরিবেশ বিজ্ঞানের গবেষক তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক সন্তু ঘোষ বলেন, ‘‘শীতকালীন পরিযায়ী পাখী সাধারণত তিব্বত, চীন ও সাইবেরিয়া থেকে আসে। এই সময়ে ওই এলাকায় তীব্র ঠান্ডার পাশাপাশি খাদ্যেরও অভাব দেখা যায়। তাই তারা উড়ে আসে ভারতে।’’ কিন্তু এ বার ছবিটা ভিন্ন। ওকটাও পরিযায়ী আসেনি কৃষ্ণসায়রে।
কেন মুখ ফেরাল পাখির দল? কর্মীরা জানান, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হাতে গোনা কয়েকটি পাখি এসেছিল। কিন্তু দু-তিন পরেই ফিরে যায় তারা। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের দাবি, সাধারণত যে জলে কচুরিপানা, জলঝাঁজি গাছ থাকে সেখানে অক্সিজেন সরবরাহ বেশি থাকে। ফলে পরিযায়ীদের ভিড় হয়। একইসঙ্গে খাদ্যের জোগানও ভাল থাকে। কিন্তু, এই বছর কৃষ্ণসায়র পরিষ্কার করা হয়েছে। সমস্ত কচুরিপানা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। জলে নানারকম ওষুধ স্প্রে করে পানা সরানোর ফলে খুব সম্প্রতি কৃষ্ণসায়রের জলে মরা মাছও ভেসে উঠতে দেখা যায়। পরিবেশবিদদের দাবি, পাখিরাও মুখ ফিরিয়েছে এই কারণেই।
অন্য বছর এমনই থাকে ছবিটা। —ফাইল চিত্র।
পরিবেশবিদ অয়ন মণ্ডল জানান, কয়েক বছর ধরেই কৃষ্ণসায়রে পাখি কমছিল। কারণ জলে বোটিং হয়। পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ির হর্নের প্রকোপও থাকে। তার পরেও খাবার ও ভাল পরিবেশের কারণে পরিযায়ীরা আসত। কিন্তু এ বার জলটাই তাদের থাকার পক্ষে উপযোগী নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy