রাস্তায় পড়ে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র।
দু’টো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেননি বাসিন্দারা। একটা বিস্ফোরণ-কাণ্ড অনেকটাই নড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে তাঁদের। বাইরে থেকে লোকজন এলাকায় থাকতে এলে তাঁদের ঠিকুজি-কুষ্ঠি জেনে নেওয়ার সচেতনতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু খাগড়াগড়ের বাসিন্দাদের দাবি, কাজকর্মে বাইরে গিয়ে এখনও লোকজনের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। এলাকার উন্নয়নও সে ভাবে হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর খাগড়গড়ে দোতলা বাড়িতে বিস্ফোরণে নিহত হন দু’জন। ঘটনাস্থল থেকে ধরা পড়েন দুই মহিলা-সহ তিন জন। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জঙ্গি-জালের হদিস পান। খাগড়াগড়ের অদূরেই বাদশাহি রোডে এক বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিস্ফোরক। চক্রে জড়ায় মঙ্গলকোটের শিমুলিয়ার এক মাদ্রাসার নাম। সেটি যে চালাত, সেই মহম্মদ ইউসুফকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স।
খাগড়াগড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখনও বাইরে কোথাও গেলে সেই বিস্ফোরণ-কাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন মানুষজন। তাঁদের দাবি, প্রশাসনকে তাঁরা তদন্তে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু পাসপোর্ট তৈরি-সহ নানা কাজে বিভিন্ন প্রশ্ন শুনতে হয় এলাকার লোকজনকে। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ হোসেন, সঞ্জীব দাসদের খেদ, ‘‘একটা ঘটনায় এলাকার দুর্নাম হয়েছে! কবে যে তা কাটবে! ”
এলাকার উন্নয়ন নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে তাঁদের। জিটি রোড থেকে খাগড়াগড় যাওয়ার মূল রাস্তাটি বেহাল। নিকাশির বেহাল দশার জন্য কয়েক পশলা বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। রাস্তার জন্য বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদ (বিডিএ) থেকে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত বারবার আবেদন করে শুধু আশ্বাস ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। এলাকায় শাসকদলের কর্মীরাও দাবি করেন, শহর লাগোয়া প্রতিটি গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ, খাগড়াগড় যেন প্রশাসনের কাছে ব্রাত্যই রয়ে গিয়েছে।
স্কুলের উন্নয়নও থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম, শাকিলা শেখদের কথায়, “স্কুলে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর কথা ছিল। তা এখনও বসেনি। শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে পাঁচিল হওয়ার কথা ছিল। কোনও অজ্ঞাত কারণে সেটাও আটকে রয়েছে।” ঘটনার আগে প্রশাসন কবরখানা ঘেরার কাজ করছিল। সেই কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
প্রশাসনের তরফে অবশ্য উন্নয়নের কাজের ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিডিএ-র সভাপতি রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ও বর্ধমানের উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, “রাস্তা সংস্কার, পানীয় জলের ব্যবস্থা হবে। খাগড়াড়ের বাসিন্দাদের চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy