Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
CPIM

অহমিকা ভুলে সবাইকে ফেরানোর বার্তা সেলিমের

বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলী থানার মাঠের ওই সভায় হাজির ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অঞ্জু কর, প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ সাহা, সুব্রত ভাওয়ালেরাও।

পূর্বস্থলীতে সেলিম। নিজস্ব চিত্র

পূর্বস্থলীতে সেলিম। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২২ ০৮:০৭
Share: Save:

দলের প্রাক্তন বিধায়ক মনোরঞ্জন নাথের স্মরণসভায় এসে কর্মীদের তাতিয়ে গেলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বিজেপি, তৃণমূকে কড়া আক্রমণ করে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কী প্রস্তুতি নিতে হবে, কর্মীদের তার দিশা দেখান তিনি। বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলী থানার মাঠের ওই সভায় হাজির ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অঞ্জু কর, প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ সাহা, সুব্রত ভাওয়ালেরাও। তাঁদের দাবি, গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের ঐক্য দৃঢ় করতে পারলে তবেই সদ্য প্রয়াত বিধায়ককে আসল সম্মান জানানো হবে।

সেলিম বলেন, ‘‘চিটফান্ডে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন আমাদের রাজ্যে। কিন্তু বিষয়টা পুরো ভুলিয়ে দিয়েছে বিজেপি, তৃণমূল। সংসদে এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয় না। বিজেপি বলেছিল, নোটবন্দি হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাস্তবে কালো টাকা কয়েক গুন বেড়ে গিয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মোদী, অমিত শাহরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কে দুর্নীতিগ্রস্ত লোক নিয়োগ করেছেন। এখানে মানিক ভট্টাচার্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরা স্কুলের নিয়োগে একই দুর্নীতি চালিয়েছেন।’’ যদিও সেলিমের অভিযোগ মানতে নারাজ দুই দলই।

এ দিন সেলিম দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস, জ্বালানি গ্যাসের দাম বাড়া নিয়ে সরব হন। শুধু মানিক ভট্টাচার্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় নন, তৃণমূলের নিচু স্তর থেকে উপর পর্যন্ত ‘দুর্নীতি-তন্ত্র’ গড়ে উঠেছে বলে দাবি করেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নভেম্বর থেকে এ সব দুর্নীতি মানুষের সামনে আনতে নানা কর্মসূচিও নিয়েছে সিপিএম। সেলিম বলেন, ‘‘এ মাস থেকে ‘গ্রামে চলো’, ‘চোর তাড়াও’, ‘গ্রাম জাগাও’ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তিন দিনেই হাজার হাজার মানুষের মিছিল দেখা যাচ্ছে গ্রামে। যাঁরা সরে গিয়েছিলেন, মুখ ফিরিয়েছিলেন, আমাদের থেকে আঘাত পেয়েছিলেন, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, যাঁরা প্রলোভনে বা আমাদের অহমিকায় চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে টেনে নিতে হবে।’’ দলের একাংশের দাবি, সব দলের একের পর এক দুর্নীতির বেড়াল বেরিয়ে পড়ার সময়ে আদর্শ, সৎ থাকতে পারাটাই মানুষের কাছে গ্রহণীয়। সেই কারণেই অহমিকা, প্রলোভন ভুলে মানুষের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক। সেলিম বলেন, ‘‘পাঁচশো টকার নোট, বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে যাঁরা এ দিক ও দিক করে, তাঁদের আদর্শ ঠিক নেই। লাল ঝান্ডা থাকলে আদর্শ থাকে। জাত-পাত-বিভেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায়।’’

কয়লা, সোনা পাচারে তৃণমূলের যোগ রয়েছে বলেও দাবি করেন সেলিম। তাঁর দাবি, দলের কাছে সব প্রমাণ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ভাইপোকে বাঁচাতে আরএসএস-এর কাছে লোক পাঠিয়েছিলেন মমতা। মোহন ভাগবতকে উপহার দিয়েছিলেন। নবাব-বাদশাদের আমলে এই উপঢৌকনের প্রথা চালু ছিল। সরকারি অফিস, টিভি, খবরের কাগজেও উপঢৌকন পাঠাচ্ছেন মমতা। যাতে ভাইপোকে না ধরা হয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মমতা বুধবারই বলেছেন, মোদীর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলবেন না। ভাগ্যের পরিহাস! এর আগে বলেছিলেন, মহম্মদ সেলিম মুখ লিউকোপ্লাস্ট আটকে রাখুন। আমাদের মুখ বন্ধ করতে হয়নি। মমতা নিজেই মোদী প্রসঙ্গে নিজের মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়েছেন।’’ ইডি, সিআইডি বিজেপির রিমোট। গতি বাড়িয়ে, কমিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বিজেপির জেলা সভাপতি (কাটোয়া) গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই ভোট ভাগের খেলায় নেমেছে সিপিএম। সিপিএম লড়াইয়েই নেই দীর্ঘ দিন। মানুষ সব জানেন।’’ তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘৩৪ বছর নানা অপকর্ম করেছে ওরা। তার ফলেই মানুষ ওঁদের সরিয়েছেন। গালগল্প নিয়ে ভোটের আগে বাজার গরম করার চেষ্টা করছে। এতে লাভ হবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM Mohammed Salim Purbasthali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy