এক যুবকের যৌনাঙ্গ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে মন্তেশ্বরের রুইগড়িয়া এলাকার ঘটনা।
গুরুতর আহত ওই যুবককে প্রথমে মন্তেশ্বর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার ভোরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে। পরিবারের অভিযোগ, চোরাই ল্যাপটপ সারানোর নাম করে বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলে তাঁর উপরে হামলা হয়। হামলার কারণ পুলিশ বা পরিবারের কাছে স্পষ্ট নয়। ব্যক্তিগত আক্রোশ এর পিছনে রয়েছে কিনা, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিএ পাশ করার পরে ওই যুবক কম্পিউটার নিয়ে পড়াশোনা করেন। বর্তমানে কম্পিউটার সারানোর কাজ করেন। শনিবার এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে তিনি বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে যান। তাঁর দাদার দাবি, অপরিচিত দুই যুবক ভাইকে ফোনে বলে, তাদের কাছে দু’টি চোরাই ল্যাপটপ রয়েছে। সেগুলি কাজ করছে না। সারাতে হবে। চোরাই ল্যাপটপ শুনে ভাই কাজ করতে বেঁকে বসেন। তবে ওই দু’জন জানিয়ে দেয়, কিছু হলে দায় তাদের। তারা সাদা কাগজে লিখে দিচ্ছে।
আহত যুবকের দাদা বলেন, ‘‘ভাই ওই কথা শুনে রাজি হয়। তবে গ্রামে ল্যাপটপ দু’টি সারানোর কাজ হলে লোক জানাজানি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঠিক হয়, প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে ভাইয়ের এক বন্ধুর দোকানে কাজ হবে। ওই দুই যুবক আমাদের বাড়িতে আসে। মোটরবাইকে তিন জন সোনাডাঙার উদ্দেশে রওনা দেয়।’’ তাঁর আরও দাবি, ভাই তাঁকে জানিয়েছেন, কিলোমিটার দুয়েক যাওয়ার পরে ওই দুই যুবক গিরিগরনগর গ্রামে ফাঁকা এলাকাতেই ভাইকে কাজটি সেরে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হয়ে যান। কাজের সময় হঠাৎ এক জন ওই যুবকের নাকে গ্যাস জাতীয় কিছু স্প্রে করে অচৈতন্য করার চেষ্টা করে। তাতে কাজ না হওয়ায় তার গলার নলি কেটে খুন করার চেষ্টা করে। ওই যুবক বাধা দেন। দু’জনের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এর পরেই ওই যুবককে নগ্ন করে তাঁর যৌনাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দুই যুবক পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
জখমের দাদার দাবি, ওই অবস্থায় তাঁর ভাই কাছাকাছি রাস্তায় এসে তিন জনের দেখা পান। গিরিগরনগরের বাসিন্দা রাজু হেমব্রম বলেন, ‘‘শনিবার রাত আটটা নাগাদ গ্রামের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ এক যুবক যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে এসে বলল, দু’জন তার যৌনাঙ্গ কেটে দিয়েছে। ফোন ওর বাড়িতে সব কথা জানিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসতে বলি।’’ ওই যুবকের দাদার কথায়, ‘‘অপরিচিত দুই যুবক ভাইকে জানিয়েছিল, সোনাডাঙা গ্রামের ভাইয়ের পরিচিত এক জনের কাছ থেকে তারা ফোন নম্বর জোগাড় করেছে। ওই নাম পুলিশকে জানিয়েছি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ওই যুবককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলেই পুরো ঘটনা সামনে আসবে।’’
এসডিপিও (কালনা) শান্তুনু চৌধুরী বলেন, ‘‘আহত যুবকের পরিবারের লোকেরা আমাদের এখনও কিছু জানায়নি। ওই যুবক একটু সুস্থ হলে বিষয়টি নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’ পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, ওই যুবক একটু সুস্থ হলেই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy