বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।
ক্যানসার হাসপাতাল তৈরিতে গড়িমসি নিয়ে পূর্ত দফতরের (সোশ্যাল) উপরে ক্ষোভ জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান স্বপন দেবনাথ। প্রায় এক বছর পরে এই হাসপাতালে রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠক হল শনিবার। এ দিন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামোর উন্নয়ন থেকে রোগীকল্যাণ সম্পর্কিত নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে ঠিক হয়, রাধারানি ভবনে নয়, বার্ন ইউনিট তৈরি হবে জরুরি বিভাগের সামনে নতুন ভবনে। সে জন্য সাত তলা ভবনের উপরে এতুন আর এক তলা বানানোর জন্য স্বাস্থ্য ভবনের অনুমোদন চাওয়া হবে। জরুরি বিভাগের সামনে অবাধ যাতায়াত আটকাতে নতুন রাস্তা তৈরির প্রস্তাবও নেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান মেডিক্যালে তৈরি হচ্ছে ‘টার্সিয়ারি ক্যানসার ইউনিট’। বছরখানেক আগে বহির্বিভাগ চালু হয়ে গেলেও, ভবন তৈরি হয়নি বলে ইন্ডোর পরিষেবা চালু হয়নি। এ নিয়ে এ দিন বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। জেলা সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহারও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পূর্ত দফতরের তরফে জানানো হয়, প্রযুক্তিগত কারণে স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাঠানো ৯ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা আটকে ছিল। সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “ভবন তৈরির কাজ তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে।” পূর্ত দফতরের দাবি, সব মিলিয়ে ভবন সম্পূর্ণ করতে ছ’মাস সময় লাগবে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বার্ন ইউনিটের জন্য মেডিক্যালে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। প্রথমে ‘নিউ বিল্ডিং’-এ ওই ইউনিট গড়ার কথা ছিল। পরে ঠিক হয়, রাধারানি ভবন সংস্কার করে সেখানেই গড়ে উঠবে বার্ন ইউনিট। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়, রাধারানি ভবন সংস্কারের অনুমোদন পেতে দেরি হবে। নতুন জায়গায় দ্রুত বার্ন ইউনিট তৈরি করতে হবে।
হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “জরুরি বিভাগের সামনের সাত তলা ভবনটি ১০ তলা করা যাবে। সেই ভবনেই আরও এক তলা বাড়ানো হবে। আট তলাতেও বার্ন ইউনিট তৈরি হবে। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে ওই ইউনিট চালু করতে চাইছি।” বৈঠকে ঠিক হয়েছে, স্বাস্থ্য ভবনের কাছে ১০ তলা করার জন্যই অনুমোদন চাওয়া হবে। বাড়তি টাকারও আর্জি জানানো হবে। জরুরি বিভাগের সামনে স্রেফ জরুরি অবস্থার রোগীর লোকজনই যাতে যাতায়াত করেন, তার ব্যবস্থা করা হবে। অন্য ওয়ার্ডের রোগীর পরিজনদের জন্য জরুরি বিভাগের পাশে নতুন গেট ও রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ভিতরে থাকা পুকুরের সৌন্দর্যায়ন নিজস্ব তহবিল থেকে করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। শিশু বা প্রসূতির মৃত্যু মেডিক্যালে তুলনায় কম বলে জানানো হয়েছে। তবে ‘রেফার’ হয়ে আসার প্রবণতা বাড়ছে বলে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে এ দিন রিপোর্ট করা হয়।
বৈঠকে আলোচনা হয়, খুব দ্রুত শয্যার পাশেই ডায়ালিসিস চালু হতে চলেছে। অনাময়ে ১০ শয্যার স্ট্রোক ইউনিট তৈরির জন্য স্বাস্থ্য ভবনে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও অনাময় হাসপাতালের বেশ কিছু জায়গা অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। জেলা পরিষদকে সৌরবিদ্যুতের আলো দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক (বর্ধমান দক্ষিণ) খোকন দাস প্রস্তাব দেন, হাসপাতালে কী কী পরিষেবা পাওয়া যায় ও একটা রিপোর্ট কার্ড তৈরি করে একটি আলোচনাচক্র করা যেতে পারে। সেই প্রস্তাব মেনেছেন কমিটির সদস্যেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy