(বাঁ দিকে) স্বপন দেবনাথ। হেলমেট না-পরায় বাইক আরোহী তিন তরুণকে কান ধরে ওঠবস করাচ্ছেন মন্ত্রী (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
হেলমেট না-পরে বাইক চালানোর ‘শাস্তি’! তিন তরুণকে কান ধরে ওঠবস করালেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। মন্ত্রীর এই আচরণের সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। স্থানীয় বিজেপি এবং সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, কেউ আইন ভাঙলে তা দেখার জন্য পুলিশ রয়েছে। মন্ত্রী নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারেন না। যদিও স্বপনের দল তৃণমূলের বক্তব্য, আইনি সংস্থান যা-ই থাকুক, অভিভাবকের মতোই ছোটদের ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী। নিজের কাজের ব্যাখ্যা দিয়ে ‘আক্ষেপের’ কথা শুনিয়েছেন মন্ত্রী নিজেও। তার পরেও বিতর্ক থেমে নেই।
সোমবার সিটি স্ক্যান যন্ত্রের উদ্বোধন করতে কালনার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশমন্ত্রী স্বপন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে হাসপাতাল চত্বর থেকে বেরিয়ে মন্ত্রী দেখতে পান, হেলমেট না-পরেই তিন জন তরুণ বাইকে চেপে হাসপাতালে ঢুকছেন। এমন দৃশ্য দেখে মন্ত্রী বেজায় চটে যান। ওই তিন তরুণকে পুলিশের সামনে দাঁড় করিয়ে প্রথমে সচেতনতার পাঠ দেন তিনি। বোঝান, একটি বাইকের দামের চেয়েও মানুষের জীবনের মূল্য কতটা। তার পরেই ওই তিন জনকে পুলিশ এবং হাসপাতাল চত্বরে থাকা সকলের সামনে কান ধরে ওঠবস করান মন্ত্রী। সেই দৃশ্য বহু মানুষ ক্যামেরাবন্দিও করেন।
ওই তরুণদের এ ভাবে শাস্তি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী পরে বলেন, “সম্প্রতি কালীপুজোর রাতে পূর্বস্থলীতে বাইক থেকে পড়ে গিয়ে চার যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রাস উৎসবেও একই ধরনের ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। এত কিছুর পরেও লেখাপড়া জানা ছেলেরা ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিনা হেলমেটে বাইক চালাচ্ছে। এটাই আক্ষেপের বিষয়।” মন্ত্রী জানান, উপস্থিত সকলকে হেলমেট পরে বাইক চালানোর জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।
তবে মন্ত্রী নিজের আচরণের ব্যাখ্যা দিলেও এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধী দলগুলি। পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “পুলিশের সামনে কান ধরে ওঠবস করালেন মন্ত্রী! এটা মন্ত্রীমশাই করতে পারেন না। দেশে আইন ও বিচার ব্যবস্থা থাকতে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কাউকে শাস্তি দেওয়ার কে?”
অন্য দিকে, সিপিএমের কালনা শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রকাশ্যে পড়ুয়াদের কান ধরে ওঠবস করিয়ে মন্ত্রী ঠিক কাজ করেননি। কেউ হেলমেট না-পরে বাইক চালালে আইন অনুযায়ী পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”
এই ঘটনায় অবশ্য অন্যায়ের কিছু দেখছে না রাজ্যের শাসক তৃণমূল। দলের রাজ্য মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “আমাদের মন্ত্রীরা সাধারণ মানুষের মতোই রাস্তায় চলাফেরা করেন। সেখানে একটি অন্যায় কাজ ওঁর চোখে পড়েছিল। তাই অভিভাবকের মতোই ভুল শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি।” প্রায় একই সুর রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের গলাতেও। তিনি বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। কিন্তু তার বাইরে অন্যায় দেখে এক জন অভিভাবক হিসাবে ছোটদের ভুল শুধরে দিয়েছেন মন্ত্রী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy