দামোদরে পাম্প হাউসের পাইপলাইনের কাছেই যথেচ্ছ বালি তোলা চলছে, রিপোর্ট দিয়েছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। নিজস্ব চিত্র
বেআইনি বালি খাদানের জেরে ক্রমশ বিপন্ন হচ্ছে আসানসোল পুরসভার বেশ কিছু পাম্প হাউস। সম্প্রতি তা তাঁদের নজরে এসেছে বলে অভিযোগ পুরসভার জল দফতরের আধিকারিকদের। অবিলম্বে এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে যে কোনও সময়ে পাম্পহাউসের পাইপ লাইন ভেঙে পড়ে জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পাম্প হাউস লাগোয়া এলাকায় বালি খাদান বন্ধ করতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। এই বেনিয়ম বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে চিঠি লেখা হচ্ছে বলে জানান পুরসভার কর্তারা।
আসানসোল পুরসভার পুরনো ও নতুন জল প্রকল্পগুলির জন্য দামোদরের পাড়ে নানা জায়গায় পাম্প হাউস তৈরি করা হয়েছে। বরাকর, মানিকেশ্বর, ভুতাবুড়ি কালাঝড়িয়া, ডামরা এলাকার এই পাম্প হাউসগুলি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল তুলে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। পাড় থেকে অন্তত ৫০-৭০ মিটার দূরে নদীগর্ভে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে জল তোলা হয়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি জল দফতরের আধিকারিকেরা পাম্প হাউস লাগোয়া এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন আশপাশে বেশ কিছু অবৈধ বালি খাদান গজিয়ে উঠেছে। বালি মাফিয়ারা অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বালি তোলায় পাম্প হাউসগুলি বিপন্ন হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
বেআইনি বালি খাদানের জেরে পাম্প হাউসে বিপদ বাড়ছে কী ভাবে? জল দফতরের বিশেষজ্ঞেরা জানান, ইচ্ছেমতো বালি তুলে নেওয়ায় নদীগর্ভে বসানো সাবমার্সিবল পাম্পের পাইপলাইনের নীচের অংশের বালি সরে গিয়েছে। এর ফলে ভারী পাইপটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। বর্ষার সময়ে দামোদর ফুলেফেঁপে উঠলে জলের চাপ বাড়বে। তখন ওই পাইপলাইন ধরে রাখা সম্ভব না-ও হতে পারে। জলের তোড়ে যে কোনও সময়ে তা ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা আধিকারিকদের। সেক্ষেত্রে ভরা বর্ষায় ভাঙা পাইপলাইন মেরামত করাও সহজ কাজ হবে না। তার জেরে জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে, দাবি কর্তাদের।
আসানসোল পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় জানান, সম্প্রতি জল দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা বিষয়টি নজরে পড়ার পরে তাঁকে রিপোর্ট দিয়েছেন। পূর্ণশশীবাবু বলেন, ‘‘এলাকা পরিদর্শন করে আমিও এই ভয়াবহ অবস্থা দেখেছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জরুরি বৈঠক ডেকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, গরমে নদীতে জলস্তর কম থাকা সত্ত্বেও আসানসোল পুরসভা এলাকায় জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেনি। বর্ষায় নদীতে পর্যাপ্ত জল থাকার পরেও যদি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে তা মেনে নেবেন না শহরবাসী। তাই পাম্প হাউসগুলি বাঁচাতে বেআইনি বালি খাদান বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে জেলা প্রশাসনকেও চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমানে ২১টি বৈধ বালি খাদান রয়েছে। তার বাইরে কোনও খাদান চলছে কি না, তার তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি। বেআইনি খাদান চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস জেলাশাসকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy