Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Priest

ভাতা পেতে ‘সমস্যা’, বাড়েনি পারিশ্রমিকও

জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক আজিজুর রহমান জানান, গ্রামের ক্ষেত্রে ব্লক থেকে ও পুর-এলাকার ক্ষেত্রে মহকুমা প্রশাসনের মাধ্যমে পুরোহিতদের নাম জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:২০
Share: Save:

পুজোর পারিশ্রমিক বাড়েনি। কিন্তু বেড়েছে প্রতিযোগীর সংখ্যা! পুরোহিত-ভাতা অনেক ক্ষেত্রেই ‘অনিয়মিত’। এমনই অভিযোগ করছেন পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন প্রান্তের পুরোহিতদের একাংশ। পাশাপাশি, তাঁরা জানাচ্ছেন, শারদ-মরসুমে কিছু রোজগার হয় ঠিকই। কিন্তু তার উপরে নির্ভর করে সংসার চলে না।

একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে, জেলায় পুরোহিতের সংখ্যা, প্রায় দশ হাজার। অন্ডালের ছোড়া ব্যোপদেব চতুষ্পাঠীর কর্ণধার কার্তিক মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁরা এ পর্যন্ত এক হাজার জনকে পৌরোহিত্যের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। অথচ, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে পশ্চিম বর্ধমানে ২,০২৩ জনকে মাসে এক হাজার টাকা করে পুরোহিত ভাতা দেওয়া হয়। আসানসোলের বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য নামে এক পুরোহিতের কথায়, “তিন মাস ভাতা পাইনি।” অন্ডালের খান্দরার রামরেণু ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “ভাতার জন্য আবেদনপত্র পূরণ করেও তা পাইনি।” একই কথা বলছেন রানিগঞ্জের সঞ্জীবন শাস্ত্রীও।

কী ভাবে পাওয়া যায় এই ভাতা? জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক আজিজুর রহমান জানান, গ্রামের ক্ষেত্রে ব্লক থেকে ও পুর-এলাকার ক্ষেত্রে মহকুমা প্রশাসনের মাধ্যমে পুরোহিতদের নাম জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে নামগুলি আসে। সেখান থেকে যাঁদের নাম অনুমোদন করা হয়, তাঁরাভাতা পান।

শুধু পুরোহিত-ভাতার ক্ষেত্রে সমস্যা নয়, রয়েছে অন্য নানা প্রসঙ্গও। পাণ্ডবেশ্বরের গোঁসাই দাস আচার্য-সহ কয়েক জন পুরোহিতের দাবি, “প্রায় সব ক্ষেত্রেই বাজরদর অনুযায়ী পারিশ্রমিক বাড়লেও, আমাদের পেশায় তেমনটা হয়নি।” তবে নির্দিষ্ট করে কত পারিশ্রমিক, তা তাঁরা জানাননি। সঙ্গে অন্য ‘বিপদের’ কথাও জানাচ্ছেন তাঁরা। বলছেন, “গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে চাকরিজীবী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের অনেকেই অবসর কাটাতে পৌরোহিত্য করছেন। তাঁরা অনেক কম টাকায় পুজো করছেন। এর ফলে, পেশাদার পুরোহিতদের সমস্যা বাড়ছে।”

বিষয়টি জানা যাচ্ছে দুর্গাপুরের বিধাননগরের অপূর্ব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। লকডাউন-পর্বে ব্যবসা লাটে ওঠে। সে সময় পৌরোহিত্যের প্রশিক্ষণ নিয়ে পুজো করতে শুরু করেন। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। ব্যবসা ফের শুরু করেছেন। কিন্তু পৌরোহিত্য এখনও ছাড়েননি, জানাচ্ছেন অপূর্ব।

সে সঙ্গে, গত দু’বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য রোজগারে টান পড়েছিল বলে পুরোহিতেরা জানিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর বাজেটে, পুজোর পদ্ধতিতে, সবেতেই কাটছাঁট হয়েছিল। পুরোহিতদের একাংশের দাবি, অন্তত ৭৫ শতাংশ আয় কমে গিয়েছিল। সে সঙ্গে, ভক্ত-সমাগম গত বছরগুলিতে বিধিনিষেধের কারণে কম হওয়ায় দক্ষিণাও সে ভাবে মেলেনি বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। তবে এ বার খানিকটা হলেও আশার আলো দেখছেন তাঁরা। সে সঙ্গে ভাতা ‘অনিয়মিত’ অভিযোগটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় আশ্বাস দিচ্ছেন আজিজুরও। তিনি বলেন, “এই সমস্যাটি ব্যাঙ্কে গিয়ে না মিটলে আমাদের কাছে এলেই মিটে যাবে।” পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট দফতর আরও বেশি সংখ্যক পুরোহিতের কাছে নিয়ম মেনে ভাতার জন্য ফর্ম-পূরণ করার আহ্বানও জানিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Priest durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy