কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে তাঁর রেডারেও রয়েছে, তা স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সপ্তাহখানেক আগে মঙ্গলকোটের নিগনে মাছের আড়তে বসে থাকার সময় গুলিতে খুন হন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা শিমুলিয়ার ১ পঞ্চায়েত সদস্য সানাউল্লা ওরফে ডালিম শেখ। বৃহস্পতিবার জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মঙ্গলকোটের ওসি প্রসেনজিৎ দত্তের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে মঙ্গলকোটে একটা খুন হয়েছে। মঙ্গলকোটের ওসি-কে বলছি, প্রকৃত খুনিদের ছাড়া যাবে না। এলাকায় যাতে শান্তি থাকে দেখবেন।’’ এর পরেই কেতুগ্রামের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। উঠে দাঁড়ান থানার আইসি বাসুদেব সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, পুলিশ ভাল কাজ করছে। তবে কেতুগ্রাম, জামালপুরের মতো কিছু জায়গায় নজর রাখতে হবে। ঘটনাচক্রে এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা থেকে ফেরার পথে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হল পরেশ বাগ (৪০) নামে তৃণমূলের এক কর্মীকে। প্রাক্তন এই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি খণ্ডঘোষের উখরিদে। এ দিন সেখানেই তাঁর উপরে হামলা হয়। এলাকা দখল নিয়ে মুক্ত শেখ নামে দলের এক কর্মীর সঙ্গে পরেশের বিবাদ ছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। এ দিন মুক্তর দলবলই পরেশের উপরে হামলা চালায় বলে নিহতের পরিবারের অভিযোগ। পরেশের অনুগামীদের মারে জখম মুক্তও।
ডালিম-খুনে উঠে এসেছিল শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। মঙ্গলকোটের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই, জেলা পরিষদের সদস্য বিকাশ চৌধুরী-সহ দলের বেশ কয়েক জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিহত ডালিমের স্ত্রীর লাভলি বিবি। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা জেনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দিদি যখন সঙ্গে আছেন,তখন বুকে বল আছে।’’
পূর্ব বর্ধমানের বাকি অংশ এক দিকে, কেতুগ্রাম আর মঙ্গলকোট যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। অজয়-ভাগীরথী তীরবর্তী এই দুই ব্লক বরাবরই জেলা পুলিশের ‘মাথাব্যথা’। বালি খাদান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক এলাকা দখলের জেরে এখানে বাম জমানার শেষের দিক থেকে শুরু হওয়া খুনোখুনির রাজনীতি এখনও চলছে। বোমা-গুলির লড়াই এই তল্লাটে নতুন ঘটনা নয়। চলতি বছর এপ্রিলে জেলা ভাগের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ঠিক পরেই কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি জাহের শেখ খুন হন। ওই ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছে শাসকদলের নেতা-কর্মীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy