পদযাত্রায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা। ছবি: বিশ্বনাথ মশান
দৃশ্য এক: নিরাপত্তারক্ষীরা ঠেলে সরিয়ে দিলেন মেনগেট এলাকার সুমন মণ্ডলকে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণাম করা হল না তাঁর। কিন্তু তার পরেও সুমন খুশি। কারণ, মমতা তাঁকে লক্ষ্য করে হাত নেড়েছেন।
দৃশ্য দুই: ‘কাছা’ পরে মমতাকে দেখার জন্য রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিলেন সঞ্জয় বাউরি নামে এক যুবক। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মা’র মৃত্যুর কারণ জানতে চান। তার পরে তাঁকে বলেন, ‘‘কোনও চিন্তা করো না। আমরা তোমার পাশে আছি।’’ এর পরেই তিনি দলের নেতাদের ওই পরিবারের পাশে থাকার নির্দেশ দেন। সন্ধ্যায় ওই যুবকের বাড়িতে যান দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়।
এমনই নানা টুকরো দৃশ্য দেখা গেল দুর্গাপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রায়। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই শত শত মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন রাস্তার ধারে। বিকেলে মমতা যখন এলেন, তখন যেন বাঁধ ভাঙল। পুলিশের দড়ির ব্যারিকেড ভেঙে সবাই একবার তাঁকে ছুঁতে চান। পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীরা হিমসিম খেলেন সারাক্ষণ।
বুধবার সন্ধ্যায় ঠিক হয়, বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে নির্বাচনী জনসভার পরে বেনাচিতির ভিড়িঙ্গি থেকে পাঁচমাথার মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন মমতা। সেই মতো এ দিন দুপুর থেকে প্রস্তুতি শুরু করে পুলিশ। আনন্দগোপাল সরণির প্রায় আড়াই কিলোমিটার দু’দিক দড়ি দিয়ে ঘিরে দেয় পুলিশ। সমস্ত মোড়ে ধাতব রেলিংয়ের ব্যারিকেড দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও মানুষের উৎসাহ কমেনি। অনেকে আবার রাস্তার ধারের বাড়ির ছাদ বা জানলা থেকেও মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে হাত নাড়তে থাকেন। প্রতি নমস্কার করে হাত নাড়েন মমতাও।
নিরাপত্তারক্ষীদের একপ্রকার ঠেলে সরিয়ে দিয়ে সটান মুখ্যমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে প্রণাম সেরেছেন বেনাচিতির বধূ কমলিকা আচার্য। মমতা তাঁকে হাত ধরে তুলে নেন। তিনি বলেন, ‘‘ভাবতেই পারছি না মুখ্যমন্ত্রী আমায় সস্নেহে কাছে টেনে নিলেন!’’
মায়ের হাত ধরে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখবে বলে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিল আট বছরের নিশান সাউ। মুখ্যমন্ত্রী কাছে আসতেই ব্যারিকেডের দড়ি গলিয়ে তাঁর কাছাকাছি চলে যায় খুদে। চলতে চলতেই মুখ্যমন্ত্রী তার গালে হাত দিয়ে আদর করেন। বাড়ির ছাদ থেকে ‘দিদি দিদি’ শব্দ শুনে বেশ কয়েকবার এ দিন থমকেছেন মমতা। উপরের দিকে হাত নেড়েছেন।
এ দিন পদযাত্রার শুরু থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা, দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তমবাবু, খাতায় কলমে ‘কংগ্রেস’ বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল, মেয়র দিলীপ অগস্তি প্রমুখ। মাঝপথে পিছন থেকে সামনে আসেন তৃণমূল নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। প্রবল গরমে দর দর করে ঘামছিলেন মমতা। চশমার ফাঁকে ঘাম পড়ে অসুবিধা হচ্ছিল। মাঝপথে তিনি চশমা খুলে তুলে দেন সঙ্গের নিরাপত্তারক্ষীর হাতে। তাঁর সঙ্গে দ্রুত গতিতে হাঁটতে গিয়ে মাঝে মাঝেই পিছিয়ে পড়েছেন বাকিরা।
তবে এ দিনের পদযাত্রা কর্মী-সমর্থকদের চাঙা করবে তা নিয়ে একমত তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy