Advertisement
E-Paper

পড়ুয়া নেই, ধুঁকছে নানা স্কুল

শহরের কম-বেশি ১১টি স্কুলে ছাত্র সংখ্যা নগণ্য। শিক্ষকেরা নিদিষ্ট সময়ে স্কুলে আসেন। পড়ুয়া না থাকায় বসে থাকতে হয় তাঁদের।

শহরের কম-বেশি ১১টি স্কুলে ছাত্র সংখ্যা নগণ্য।

শহরের কম-বেশি ১১টি স্কুলে ছাত্র সংখ্যা নগণ্য। —প্রতীকী চিত্র।

প্রণব দেবনাথ

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০:২১
Share
Save

ছাত্রের অভাবে কাটোয়া শহরের বেশ কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল ধুঁকছে বলে দাবি শহরবাসীর একাংশের। স্থানীয় সূত্রের খবর, কোনও কোনও স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি মিলিয়ে ছাত্রসংখ্যা পনেরোর নীচে। শহরের কম-বেশি ১১টি স্কুলে ছাত্র সংখ্যা নগণ্য। শিক্ষকেরা নিদিষ্ট সময়ে স্কুলে আসেন। পড়ুয়া না থাকায় বসে থাকতে হয় তাঁদের। কখনও মোবাইল ঘাঁটতে, কখনও এলাকায় ঘুরে বেড়াতেও দেখা যায় তাঁদের, দাবি শহরের কয়েক জন বাসিন্দার। বছরের পর বছর ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে এই অব্যবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ শহরের শিক্ষাপ্রেমী মানুষ। চিন্তিত শিক্ষা দফতরও।

স্কুল শিক্ষা দফতরের কাটোয়া পশ্চিম চক্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া শহরের বাউরিপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১২ জন ছাত্র রয়েছে। একই ভাবে, মাধবীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবিন্দচাঁদ প্রাথমিক বিদ্যালয়, জানকীলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাহেববাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইন্দিরা গান্ধী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গৌরাঙ্গপাড়া ও ডিডিসি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও ছাত্রের অভাবে ধুঁকছে। কোনও কোনও স্কুলে ১৫ জন ছাত্রও নেই। প্রতিটি স্কুলেই দু’জন করে শিক্ষক রয়েছেন। স্কুলে সময় কাটিয়ে বাড়ি চলে যান তাঁরা। কোনও কোনও দিন তাঁরা পড়ুয়াদের বাড়িতে যান। তাদের স্কুলে পাঠানোর আর্জি জানান অভিভাবকদের কাছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ কাটোয়া শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাউরিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এক জন ছাত্রও নেই সেখানে। এক শিক্ষক স্টাফ রুমে বসে রয়েছেন। স্কুলের ভিতরে টিউবওয়েলের জলে স্নান করছেন দুই বাসিন্দা। সামনে বাঁধানো ফাঁকা জায়গায় দড়িতে ঝুলছে গামছা ও পোশাক। স্কুলের ফাঁকা দালানে নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নিচ্ছে পথ
কুকুরের দল।

শহরের কয়েক জন বাসিন্দা বলেন, “সরকারি স্কুলে আগের মতো পড়াশোনা হয় না। স্কুলের সময়ে প্রায়ই কোনও কোনও শিক্ষককে থানা চত্বরে, পুরসভা মোড়ে বা কাছারি রোডে চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দেখা যায়। এমন পরিবেশ দেখেই সরকারি স্কুলের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেন। বাধ্য হয়ে বেসরকারি স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করান তাঁরা।”

মাধবীতলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়-সহ আরও কয়েকটি স্কুলের ছবিও মোটের উপরে একই রকম। মাধবীতলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথায়, “আমরা স্কুলে নির্ধারিত সময়েই আসি। আবার নির্ধারিত সময়েই স্কুল বন্ধ করে বাড়ি ফিরি। স্কুলে ১০-১২ জন ছাত্র আছে। তা-ও আবার কোনও কোনও দিন সবাই আসে না। স্কুলে এসে আমাদের সময় কাটানো মুশকিল
হয়ে পড়ে।”

বাউরিপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবরাজ ঘোষ বলেন, “আমাদের স্কুলে ১২ জন ছাত্র রয়েছে। ছাত্রসংখ্যা বাড়ানোর অনেক চেষ্টা করি। নির্ধারিত সময়ে স্কুলে আসি। স্কুল চলাকালীন বাইরে আড্ডা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

কাটোয়া পশ্চিম চক্রের স্কুল পরিদর্শক ফ্যান্সি মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলে ছাত্র সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। ওই সমস্ত স্কুলে কী ভাবে ছাত্রসংখ্যা বাড়ানো যায় তা নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। শিক্ষকেরা স্কুলে সব সময় থাকছেন কিনা তা দেখা হবে। বিষয়গুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Students school Education

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}