জেলার জঙ্গলমহল এলাকা-সহ প্রায় ৫০টি গ্রামের ভরসা একটি মাত্র গ্রামীণ হাসপাতাল। কিন্তু সেখানেও ডাক্তারের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। এমনই অবস্থা বুদবুদের মানকর গ্রামীণ হাসপাতালটির। চিকিৎসক নিয়োগের আর্জি জানিয়ে আসানসোল জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে চিঠি পাঠালেন হাসপাতালের সুপার।
গ্রামীণ এলাকার চিকিৎসা পরিষেবার জন্য তৈরি করা হয় মানকর গ্রামীণ হাসপাতাল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাসপাতাল তৈরি হওয়ার পর বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার-সহ নানা জটিল চিকিৎসাও হত এখানে। ৩০ শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার ধীরে ধীরে অবনতি হতে থাকে। বন্ধ হয়ে যায় নানা রকম অস্ত্রোপচার। কিছু কিছু রোগের চিকিৎসা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হত রোগীদের, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বছর দুয়েক আগে আবার অনেকটাই হাল ফেরে হাসপাতালের। আগের মতো প্রসূতি বিভাগ-সহ নানা বিভাগে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। বন্ধ্যাত্বকরণও করা হয় এখানে। হাসপাতালের হাল ফেরায় অনেকটাই সুবিধা হয় এলাকাবাসীর। এই হাসপাতালের উপরে নির্ভর করেন মানকর-সহ কোটা, দেবশালা, বুদবুদ, চাকতেঁতুলের মতো বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। এ ছাড়া আউশগ্রাম ১ ও ২ নম্বর ব্লকের অনেকেই এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও প্রতি দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রায় আড়াইশো রোগী আসেন। তাই চাপ ভালই থাকে। তা ছাড়া হাসপাতালের ওয়ার্ডেও প্রায় সব সময়েই ভর্তি থাকে। মানকর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ছ’জন। একটি পদ ফাঁকা রয়েছে বেশ কিছু দিন। বাকি পাঁচ জন চিকিৎসকের মধ্যে এক জন এখন ছুটিতে রয়েছেন। আর এক জন অবসর নেওয়ার পরেও তাঁকে মেয়াদ বাড়িয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু তিনিও এখন অসুস্থ। অন্য এক চিকিৎসককে ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পুরশা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ফলে, এখন দু’জন চিকিৎসক নিয়েই কাজ সারতে হচ্ছে হাসপাতালে। তার জেরে বহির্বিভাগ ও ভর্তি থাকা রোগীদের দেখাশোনায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কর্মরত দুই চিকিৎসক। অনেক সময়ে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরেও চলে যায় বলে অভিযোগ।
চিকিৎসক কম থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় রোগীদেরও। দূরের এলাকা থেকে চিকিৎসা করাতে এসে অনেককেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। দেবশালার বিশ্বনাথ মুর্মু, ভাতকুণ্ডার মীর হোসেনরা বলেন, ‘‘মাত্র দু’জন চিকিৎসক হাসপাতালে। তাঁরা কখনও বাইরের রোগী দেখছেন, আবার ভর্তি থাকা রোগীদেরও দেখতে হচ্ছে।’’ হাসপাতালের সুপার অসিতকুমার সিংহ বলেন, ‘‘আমি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়া চিকিৎসককে আবার এই হাসপাতালে পাঠানোর আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।’’ আসানসোল জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদারের সঙ্গে শনিবার বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy