কাটোয়ার রাস্তায় দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র
পদ থেকে তাঁর অপসারণের দাবি তুলে ফের বিজেপির পতাকা হাতে বিক্ষোভ হল দলের জেলা সভাপতির (কাটোয়া) বাড়ির সামনে। শনিবার এ নিয়ে জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের অনুগামীদের সঙ্গে গোলমাল-মারপিট বেধে যায় বিক্ষোভকারীদের। দু’পক্ষের চার মহিলা-সহ জনা আটেক জখম হন বলে অভিযোগ। বিক্ষোভের জেরে কাটোয়ার কারবালাতলা ও বারোয়ারিতলা রোডে যানজট তৈরি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কৃষ্ণবাবুকে দলের পদ থেকে অপসারণের দাবিতে দিনকয়েক আগে কাটোয়ার ইঁদারাপাড়ে বিক্ষোভ দেখান কিছু কর্মী-সমর্থক। তাঁকে কালো পতাকাও দেখানো হয়। এর পরে, কালনায় এক কর্মসূচিতে গিয়েও বিজেপির পতাকা হাতে আসা কিছু লোকের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। প্রতিবারই কৃষ্ণবাবু দাবি করেছেন, বিক্ষোভকারীরা দলের কেউ নন। এ দিন বাড়ির সামনে গোলমাল হলেও তাঁকে দেখা যায়নি। বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। জবাব মেলেনি মোবাইলে পাঠানো মেসেজেরও। তবে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘কৃষ্ণ ঘোষই জেলা সভাপতি থাকবেন। কেউ প্রকাশ্যে বিশৃঙ্খলা করলে দল তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’
বিজেপির পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখানো কর্মীদের অভিযোগ, ‘লকডাউন’ ও ঘূর্ণিঝড়ের জন্য দলের তরফে পাঠানো ত্রাণ নিয়ে জেলা সভাপতি দুর্নীতি করেছেন। এ ছাড়া পুরনো কর্মীদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে তৃণমূল থেকে আসা লোকজনকে পদ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাস দেড়েক ধরে এই সব বিষয় নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। এ দিন সকালে কাটোয়া ও কালনা মহকুমার নানা এলাকা থেকে বাস ও ট্রাক্টরে করে লোকজন কাটোয়ায় জড়ো হন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অনেক মহিলাও। মিছিল করে তাঁরা কৃষ্ণবাবুর বাড়ির দিকে এগোচ্ছিলেন। এরই মধ্যে দলের জেলা মহিলা মোর্চার সম্পাদক সীমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কৃষ্ণবাবুর সমর্থনে পোস্টার হাতে জড়ো হন কিছু বিজেপি কর্মী-সমর্থক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ শহরের আতুহাটপাড়া শীতলাতলার সামনে দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে বচসা বাধে। তা থেকে সংঘর্ষ বেধে যায়। সীমাদেবীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা দীর্ঘক্ষণ কৃষ্ণবাবুর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। কালনা থেকে আসা শম্পা গাইন, মৌ মণ্ডল, সুপর্ণা মালোরা অভিযোগ করেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করে বিক্ষোভে শামিল হতে যাচ্ছিলাম। তখনই সীমা ভট্টাচার্যেরা গায়ে পড়ে বচসা করে মারধর করে। পুলিশকে সব জানিয়েছি।’’
নিজেদের বিজেপি কর্মী বলে দাবি করে পলাশ মল্লিক, গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমেন মুখ্যোপাধ্যায়দের অভিযোগ, ‘‘দলের নানা কর্মসূচির টাকা তো বটেই, ত্রাণ নিয়েও দুর্নীতি করেছেন জেলা সভাপতি। টাকার বিনিময়ে তৃণমূলের লোকজনকে দলেপ পদ পাইয়ে দিচ্ছেন। তাঁর অপসারণের দাবি জানানোয় আমাদের মারধর করার পরে আমাদের নামেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ সীমাদেবীর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘দল থেকে বহিষ্কৃত কিছু লোকজন তৃণমূলের মদতে জেলা সভাপতির বাড়ি ঘেরাও করতে যাচ্ছিল। প্রতিবাদ করায় আমাদের রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। সাত জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছি।’’
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন অবশ্য বলেন, ‘‘দল এখন বড় হচ্ছে, অন্য দল থেকে লোক আসছে। ফলে, মাঝে-মধ্যে এ ধরনের সমস্যা হয়। এ সব আমরা সামলে নেব।’’
কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি নিজেদের কোন্দল ঢাকতে আমাদের নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। মানুষ প্রকৃত সত্যটা জানেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy