পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব পি উগলানাথন। —ছবি : সংগৃহীত
কোনও পঞ্চায়েতে কর আদায় কম তো কোনও পঞ্চায়েতে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ‘ডিজিটাল স্বাক্ষর শংসাপত্র’ (ডিএসসি) থাকছে তৃতীয় পক্ষ বা ঠিকাদার গোষ্ঠীর কাছে। আবার পঞ্চায়েতের তৈরি রাস্তা, ভবনের গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। মঙ্গলবার রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব পি উগলানাথন পঞ্চায়েতগুলিকে ঠিক রাস্তা দেখাতে দেখাতে রাজ্যের প্রত্যেক জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি গোটা রাজ্যজুড়ে একাধিক পঞ্চায়েতে গিয়ে বিভিন্ন কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা। আইএসজিপির আধিকারিকেরাও বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রকল্পের অগ্রগতি দেখে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে রিপোর্ট জমা দেন। পঞ্চায়েত সচিব চিঠিতে জানিয়েছেন, পরিদর্শনের সময়ে এমন কিছু বিষয় নজরে এসেছে, যা থেকে মনে হয়, পঞ্চায়েতের কাজ ঠিক ভাবে হচ্ছে না। ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের রাজ্যের কর্তারা প্রতিটি জেলায় ২টি থেকে ৭টি পঞ্চায়েত পরিদর্শন করে কাজের গুণমান দেখেন। আর আইএসজিপি-র কর্তা প্রতিটি জেলায় দু’টি পর্যায়ে ২০টি পঞ্চায়েত ঘুরে দেখে কাজের অগ্রগতির মূল্যায়ণ করেন।
পঞ্চায়েতের এক কর্তা বলেন, “ওই দু’টি স্তরের রিপোর্ট দেখে রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় কোথায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে, কী কী নিয়ম ভেঙে পঞ্চায়েত পরিচালনা হচ্ছে–তার উপরে নজর দেওয়ার জন্য জেলাশাসকদের বলা হয়েছে।” নির্দেশিকা পাওয়ার পরেই একাধিক জেলা বৃহস্পতিবার বিকেলে এসডিও-বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করে।
পরিদর্শকদের নজরে এসেছে, বিভিন্ন পঞ্চায়েত ১ লক্ষ টাকার কমের বিজ্ঞাপন ঠিকমতো জনবহুল জায়গাতে টাঙায় না। আবার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত ই-টেন্ডারের নিয়ম মানছে না। এক পরিদর্শকের দাবি, “ডিএসসি একটা গুরুত্বপূর্ণ নথি। পঞ্চায়েতের বদলে তা ঠিকাদার গোষ্ঠীর কাছে থাকছে কিংবা কোনও নেতার পকেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে।” বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত বিরক্তি প্রকাশ করেছেন সচিব। তিনি জেলাশাসকদের চিঠিতে জানিয়েছেন, ডিএসসি তৃতীয় পক্ষের কাছে থাকা নিয়ম বহির্ভূত। এটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে থাকাই বাধ্যতামূলক। পরিদর্শকদের দাবি, কোনও কারণ ছাড়াই অধিকাংশ কাজের সময়সীমা পার হয়ে যাচ্ছে। যা নিয়ে কোনও পক্ষের গুরুত্ব নেই। সচিব এই বিষয়টি দেখার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন।
পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, ই-দরপত্র এড়াতে বড় কাজকে ভেঙে ছোট ছোট কাজ দেখিয়ে সাধারণ দরপত্র ডাকার প্রবণতা গ্রাম পঞ্চায়েতের রয়েছে। এর ফলে বড় কাজ হচ্ছে না, ঠিক পদ্ধতিতে কাজ হচ্ছে না বলে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ধাক্কা খাচ্ছে। সচিব এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ওই চিঠিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কাজে মানে ঘাটতি থাকছে। যৌথ পরীক্ষাও ঠিকমতো হচ্ছে না। ফলে, পরিকাঠামোগত উন্নয়নে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কংক্রিটের রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে, ভবনে ফাটল দেখা দিচ্ছে। নর্দমা তৈরির পরে দু’ধারের ঢালাইতে চিড় দেখা যাচ্ছে। এমনকী পানীয় জলের প্ল্যাটফর্মও ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে না। সচিব প্রতিটি কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনটে পর্যায়ে গুণগত মান পরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন।
পঞ্চায়েতের এক কর্তা বলেন, “নির্মাণ সামগ্রী পরীক্ষা করার জন্য ছ’টি যন্ত্র পঞ্চায়েতকে কিনতে বলা হয়েছে। কেনাও হয়েছে। কিন্তু তা ব্যবহার হয় না। ঠিকাদারদের উপরেই নির্ভর করে পঞ্চায়েতগুলি। সে সব চলবে না বলে সচিব জানিয়ে দিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy