Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

ট্যাঙ্কে কেরোসিন রেখে কারবার

শক্তিগড়ের ওই বাড়িতে এমন বন্দোবস্ত দেখে চোখ কপালে ডিইবি-র কর্মী-আধিকারিকদের। ইনস্পেক্টর বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে কেরোসিনের ব্যবসা চালানোর অভিযোগে বাড়ির মালিক-সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫৭
Share: Save:

দোতলা বাড়ি। তারও নীচে রয়েছে একটি হলঘর। সেখানে সার দিয়ে রাখা ড্রাম। ঘর জুড়ে কেরোসিনের কটূ গন্ধ। ঘরের ভিতরে স্তম্ভে নেমে এসেছে কলের পাইপ। তার মুখে লাগানো প্লাস্টিকের পাইপ।

ঘরের ভিতরে কল কেন, বিস্মিত হয়েছিলেন জেলা এনফোর্স শাখার (ডিইবি) এসআই স্নেহাশিস চৌধুরী। কৌতুহলবশত কলটি খুলতেই বেরোয় থাকে নীল রঙের কেরোসিন। চক্ষু চড়কগাছ জেলা এনফোর্সমেন্ট শাখার পুলিশ কর্মীদের। কেরোসিন আসছে কোথা থেকে? পাইপ ধরে এগিয়ে এনফোর্সমেন্ট শাখার ইনস্পেক্টর অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ছ’জনের দলটি দেখে, একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির ডান দিকে একটি গলি রয়েছে। সেটি দিয়ে গিয়ে দেখা মেলে ফাইবারের ছাউনিতে ঘেরা দেড় হাজার লিটারের ট্যাঙ্কের। সেখানেই রয়েছে কেরোসিন।

শক্তিগড়ের ওই বাড়িতে এমন বন্দোবস্ত দেখে চোখ কপালে ডিইবি-র কর্মী-আধিকারিকদের। ইনস্পেক্টর বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে কেরোসিনের ব্যবসা চালানোর অভিযোগে বাড়ির মালিক-সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ কেরোসিন ট্যাঙ্কে তোলা হয় কী ভাবে? ডিইবি-র আধিকারিকেরা জানান, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, কেরোসিনের ব্যারেল বেসমেন্টের ঘরের সামনে রাখা হয়। তার পরে পাম্পের মাধ্যমে কেরোসিন পৌঁছে যায় ট্যাঙ্কে। প্রয়োজন মতো কল চালিয়ে দিলেই কেরোসিন চলে আসে। ধৃতদের বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় অভিযোগ করেছে ডিইবি। তারা জানায়, ওই বাড়ি-সহ বেশ কয়েকটি দোকানে হানা দিয়ে বেআইনি ভাবে মজুত ২৯ ড্রাম কেরোসিন আটক করা হয়েছে, খোলা বাজারে যার দাম ৩ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা।

জেলা পুলিশের দাবি, শক্তিগড়ের কাছে একটি পেট্রোল পাম্প রয়েছে। সেখানকার এক অংশীদার কেরোসিনের ডিস্ট্রিবিউটার। সেখানে হানা দিয়ে পুলিশ তিন জন কর্মীকে আটক করে। তাদের কাছে তথ্য পেয়ে পুলিশ শক্তিগড় ও বড়শুলের কয়েকটি কেরোসিন দোকানে যায়। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ সাধন সামন্তের বাড়ি গিয়ে দেখে, ছাদে কেরোসিনের ট্যাঙ্ক রয়েছে। সেখান থেকেই পাইপে করে কেরোসিন বিক্রি হচ্ছে। পুলিশের এক কর্তার ধারণা, ‘‘পেট্রল পাম্পের অংশীদারের সঙ্গে ধৃত বাড়ির মালিকের যোগসাজস রয়েছে।’’

পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জানিয়েছে, বিভিন্ন গ্রামে তাদের কেরোসিনের দোকান রয়েছে। সেখান থেকেই বিক্রিবাটা হয়। সেই কেরোসিনে শুধু হ্যারিকেন নয়, সেচের পাম্পও চলে। চাষিরা জানান, জলের অভাবে সেচখাল বা পুকুর থেকে জল নেওয়ার জন্য পাম্প চালাতে হচ্ছে। ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় কেরোসিন দিয়েই কাজ চালাচ্ছেন তাঁরা। সেই সুযোগে সরকারি ভাবে ৩২ টাকার কেরোসিন খোলা বাজারে ৬০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে, মনে করছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Kerosene Illegal Business Shaktigarh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE