Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Rainfall at Bardhaman

আগুন জ্বেলে বিশ্বকর্মা প্রতিমা শুকোনোর চেষ্টা

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের খরচ। সেই তুলনায় প্রতিমার দাম বাড়েনি। সেখানে আবহাওয়ার এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কপালে ভাঁজ পড়েছে তাঁদের।

উনুনে প্রতিমার শোকানো চলছে। রবিবার দুর্গাপুরে গ্যারাজ মোড়ে একটি কুমোরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

উনুনে প্রতিমার শোকানো চলছে। রবিবার দুর্গাপুরে গ্যারাজ মোড়ে একটি কুমোরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৫
Share: Save:

কেউ বরাত পেয়েছেন ৭৫টি। কেউ বা পেয়েছেন ৬০টি। শনিবার থেকে টানা বৃষ্টির জেরে দুর্গাপুরের কুমোরপাড়াগুলিতে শুরু হয়েছে হা-হুতাশ। মঙ্গলবার বিশ্বকর্মা পুজো। তার আগে কী ভাবে উদ্যোক্তাদের হাতে প্রতিমা তুলে দেবেন, ভাবনায় প্রতিমাশিল্পীরা। কুমোরপাড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে রং, তুলি। কিন্তু কারিগরেরা কার্যত হাত গুটিয়ে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। রোদের দেখা নেই। এ দিকে, রঙের প্রলেপ দেওয়ার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। মৃৎশিল্পীরা জানান, রোদের অভাবে প্রতিমার গায়ে দেওয়া মাটির শেষ প্রলেপ শুকোচ্ছে না। আবার কিছুটা শুকিয়ে যাওয়া প্রতিমায় রং দিলে ভিজে আবহাওয়ার জন্য তা-ও শুকোচ্ছে না। প্রতিমার সংখ্যা বেশি হওয়ায় গ্যাসের বার্নার জ্বালিয়েও সামাল দিতে পারছেন না মৃৎশিল্পীরা। কোথাও দেখা গিয়েছে, বস্তা বস্তা ঘুঁটে এনে আগুন জ্বেলে প্রতিমা শুকোনোর কাজ চলছে। মৃৎশিল্পীরা জানান, এই শিল্পে উপযুক্ত কর্মী পাওয়ার অসুবিধা রয়েছে।

অন্য দিকে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের খরচ। সেই তুলনায় প্রতিমার দাম বাড়েনি। সেখানে আবহাওয়ার এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কপালে ভাঁজ পড়েছে তাঁদের। গ্যাস জ্বালিয়ে প্রতিমা শুকোতে গিয়ে খরচ আরও বাড়ছে। শিল্পীরা জানাচ্ছেন, এখন আর আগের মতো বড় প্রতিমা বিক্রি হয় না। ছোট প্রতিমার সংখ্যা অনেকে বেড়েছে। কারণ, আগের থেকে শহরে বিশ্বকর্মা পুজোর সংখ্যা বেড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে দুর্গাপুরে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার রমরমা ছিল। তখন সেই সব কারখানায় ধুমধাম করে পুজো হত, মেলা বসত। বিশ্বকর্মা পুজো দেখতে ভিড় জমে যেত সেই সব কারখানায়। কিন্তু একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা রুগ্‌ণ হতে শুরু করতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। বিশ্বকর্মা পুজোর জৌলুস কমে যায়। কোনও রকমে নামমাত্র পুজো হত। পরের দিকে সেই সব কারখানাগুলিতে ঝাঁপ পড়ে যাওয়ায়, বিশ্বকর্মা পুজো কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। তবে বেসরকারি ইস্পাত ও ইস্পাত অনুসারী কারখানাগুলি গড়ে ওঠার পরে, পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলায়। সব কারখানায় পুজো শুরু হয়। তা ছাড়া, ছোটখাটো কারখানা, গ্যারাজ, দোকানের সংখ্যাও গত কয়েক বছরে অনেক বেড়েছে শহরে। ফলে, বিশ্বকর্মা পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে।

এসবি মোড়ের মৃৎশিল্পী মিলন দাস বলেন, “আগের থেকে বিশ্বকর্মা পুজোয় বরাতের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু এ বার আবহাওয়ার জন্য চরম বিপাকে পড়েছি। হাতে মাত্র এক দিন। গ্যাসের বার্নার জ্বালিয়ে প্রতিমা শুকোতে গিয়ে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কী ভাবে সামলাব জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Viswakarma Puja Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE