প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসতেই কাটোয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে ফের শুরু হল রাজনৈতিক তরজা। প্রকল্প কেন এখনও বাস্তবায়িত হল না, তা নিয়ে পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছে নানা পক্ষ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিওয়াইএফ কাটোয়ার শ্রীখণ্ড গ্রামে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের সামনে সমাবেশ করে। রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাবে প্রকল্প চালু হয়নি বলে অভিযোগ তোলা হয়। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, সিপিএম এবং বিজেপি এর জন্য দায়ী। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট এলেই এই প্রকল্প নিয়ে সরব হয় রাজনৈতিক দলগুলি। ভোট মিটে গেলেই সব ধামাচাপা পড়ে যায়।
কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কাটোয়া-বর্ধমান রোডে শ্রীখণ্ড গ্রামে ৯.৯ একর জমিতে তৎকালীন বিদ্যুৎমন্ত্রী মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের উপস্থিতিতে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (পিডিসিএল) চাষিদের কাছ থেকে ৩৩৯ একর জমি নিয়ে কাজ শুরু করে। তবে জমি দিতে বেঁকে বসেন কোশিগ্রাম, শ্রীখণ্ড, দেবকুণ্ডু গ্রামের চাষিদের একাংশ। গড়ে ওঠে ‘কৃষিজমি কৃষক ও খেতমজুর বাঁচাও কমিটি’। অধিগৃহীত জমি ঘেরা ও প্রকল্পের জন্য অফিস ভবন ও কর্মী আবাসন গড়ে তোলা হয়। বছর পাঁচেক পরে জমির দাবি অনুযায়ী দাম পেয়ে অনেক চাষিই জমি বিক্রি করে দেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরের বছর, ২০১২ সালের অগস্টে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি রূপায়ণের ভার পিডিসিএলের হাত থেকে এনটিপিসি-কে দেওয়া হয়। প্রকল্পের সুবিধায় রাজ্য সরকার ১০০ একর জমি দেয়। এনটিপিসি এলাকার চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি প্রায় ২০০ একর জমি কেনে। ৬৩০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট তৈরির কাজে হাত দেওয়া হবে বলে সেই সময়ে জানানো হয়। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে এনটিপিসি-র কর্তারা প্রকল্প এলাকা ঘুরে ৪৮ মাসের মধ্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার আশ্বাসও দেন। কিন্তু এখনও তা হয়নি।
কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের প্রবল বাধা অতিক্রম করেই আমরা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্য সরকার ২০১২ সালে এনটিপিসি-কে প্রকল্প হস্তান্তর করে। এ নিয়ে কেন্দ্রের উপরে কোনও চাপ সৃষ্টি করেনি। তাই প্রকল্প হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের জন্য আমরা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনে নামছি।’’ কাটোয়া মহকুমা কংগ্রেস সভাপতি জগদীশ দত্তের অভিযোগ, ‘‘উন্নয়নের নামে বিজেপি ও তৃণমূল মানুষকে শুধু ভাঁওতা দিচ্ছে।’’
কাটোয়ার বিধায়ক তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘শিলান্যাসের পরে, সিপিএম দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও প্রকল্প করতে পারেনি। এনটিপিসি কেন্দ্রীয় সংস্থা। কেন্দ্রের বিজেপির সরকার সব কিছু বিক্রির রাস্তায় হাঁটছে। তাই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে না। সিপিএম ভোটের মুখে মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই আমাদের নামে মিথ্যা দোষারোপ করছে।’’ বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা (কাটোয়া) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের আবার দাবি, ‘‘কর্মসংস্থান হোক, এটা সিপিএম বা তৃণমূল কেউই চায় না। ওদের চক্রান্তেই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি আটকে রয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এলে, প্রকল্প গড়ে তুলব।’’
এনটিপিসি-র কাটোয়ার আধিকারিক কৌশিক মাইতি প্রকল্পের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy