অগ্নিকাণ্ডের পরে এডিডিএ ভবনে তদন্তে ফরেন্সিক দল।দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে। ছবি: বিকাশ মশান ।
এডিডিএ কার্যালয়ে আগুন লাগার ঘটনার পরে নানা নথি পুড়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন শহরবাসীর অনেকে। সোমবার গভীর রাতে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে এডিডিএ কার্যালয়ের তিনতলায় আগুন লাগে। বিভিন্ন বিভাগের কাগজপত্র, কম্পিউটার পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জমি, বাড়ি-সহ নানা নথি নিয়ে চিন্তায় অনেকে। তা দূর করতে বুধবার অস্থায়ী শিবির চালু করে কাজ শুরু করে দিল এডিডিএ। এ দিনই ৫ সদস্যের ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহ করে।
পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুন যেখানে লেগেছিল, সেখানে কিছু জায়গা এখনও ঠান্ডা হয়নি। ফের যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য দমকলের দু’টি ইঞ্জিনকে এ দিনও কাজ করতে দেখা যায়। ছিল পুলিশের বড় বাহিনীও।
এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এত বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিজেদের কাগজপত্র নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাঁদের সেই অসুবিধা দূর করতে অস্থায়ী শিবির করে কাজ শুরু করা হল। মঙ্গলবারই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিই। বৃহস্পতিবার থেকে কার্যালয়ের একাংশ খোলার চেষ্টা করা হবে।’’ তিনি দাবি করেন, সংস্থার কেউ অন্তর্ঘাতের সঙ্গে জড়িত, তা তিনি বিশ্বাস করেন না। ফরেন্সিক দল ডাকার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাই। কোনও প্রশ্ন যেন না থাকে। আমরাও বিভাগীয় তদন্ত করব।’’
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুন যেখানে লেগেছিল, সেখানে ভূমি, আইন, টাউনশিপ, প্ল্যানিং, এস্টাবলিশমেন্ট, অ্যাকাউন্টস, কনফিডেন্স, দু’টি এইও কার্যালয়, সিনিয়র ল’ক্লার্ক, ক্যাশিয়ার, ফেসিলিটেশন-সহ নানা বিভাগ রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে এই সব বিভাগের কম্পিউটার, আসবাবপত্র, কাগজপত্র সব পুড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারই এডিডিএ-র চার ইঞ্জিনিয়ার ভবন পরিদর্শন করেন। তাঁরা জানান, কোথাও ফাটল বা অন্য কোনও বড় ক্ষতি নজরে আসেনি। চেয়ারম্যান তাপস জানান, পুরসভা ও পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদেরও পরিদর্শনের আর্জি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘তার পরে যদি কোনও ব্যবস্থা নিতে হয়, তা নেওয়া হবে।’’ এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুনে বেশ কিছু ভল্টের নীচে থাকা চাকা নষ্ট হয়ে বসে গিয়েছে। সেই সব ভল্ট খোলা যাচ্ছে না। সেগুলি খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দমকলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে ১৯৯৪ সালে এক বার এডিডিএ-তে আগুন লেগেছিল। তবে বহু নথিপত্র পুড়ে গেলেও আগুন এত বিধ্বংসী হয়নি। কারণ, তখন আসবাবপত্র ছিল মূলত কাঠের। অন্দরসজ্জার বাহারও তেমন ছিল না। কিন্তু আধুনিক অন্দরসজ্জায় যে সব সামগ্রী ব্যবহার করা হয়, তা দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে। তা ছাড়া, ঘরে মাথার উপরে অন্দরসজ্জার ভিতর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া হয়। ইঁদুর সে সব তার কেটে দিতে পারে, এমন সম্ভাবনাও থাকে। এডিডিএ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এত বড় অগ্নিকাণ্ডের পরে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। পুরনো ভবনে আধুনিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। এই পরিস্থিতিতেও কী ভাবে তা উন্নত করা যায়, দেখা হচ্ছে বলে জানান তাপস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy