পূর্বস্থলীতে নামল সেনা
জলবন্দি মানুষদের উদ্ধারে নামতে হল সেনাবাহিনীকে। এমনিতেই ভাগীরথী জল ক্রমশ বাডতে থাকায় গত চার দিন ধরে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ঝাউডাঙা পঞ্চায়েত এলাকার হালতেচরা, রুদ্রডাঙা, কাশীপুর, সরবোয়ারি এবং দক্ষিণ ঝাউডাঙা গ্রামে জল ঢুকছিল। রবিবার পরিস্থিতি বিপ্পজনক হয়ে যায়। ব্লক প্রশাসনের তরফে ওই এলাকাগুলি থেকে বেশ কিছু পরিবারকে উঁচু জায়গায় তুলে আনা হয়। তারপরেও অনেকেই জল কমে যাওয়ার আশায় গ্রামেই পড়েছিলেন। কিন্তু ভাগীরথী বিপদসীমা পেরোনোয় ওই পরিবারগুলিকে দ্রুত উদ্ধারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেনা পাঠায় জেলা প্রশাসন। এ দিন সেনাবাহিনীর ৪২ জনের একটি দল ৮টি স্পিড বোট নিয়ে ওই ব্লকের পাটুলি ফুটবল ময়দানে পৌঁছয়। ৬টি নৌকা নামানো হয় জলে। উদ্ধারের পরে স্থানীয় একটি উচবিদ্যালয়ে বাসিন্দাদের পৌঁছে দেয় সেনাবাহিনী। কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ জানান, সেনাবাহিনী বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৩০০ মানুষকে উদ্ধার করেছে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দলের সদস্যরা মন্তেশ্বরে পৌঁছেছে। গ্রামে আটকে পড়া দুর্গতদের উদ্ধার কাজও শুরু করেছে তারা।
বাড়ছে মৃত্যু
মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে জলবন্দি এলাকাগুলিতে। রবিবার কালনা ১ ব্লকে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের নাম সহিস বালা পাত্র (৪৪)এবং সহিদুল শেখ(৪)। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রাণ শিবিরে অসুস্থ্ হয়ে মৃত্যু হয়েছে সহিস দেবীর। আর সহিদুলের মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে। এ দিনই বিকেলে মন্তেশ্বরের আমাটিয়া গ্রামের নিখোঁজ যুবক গৌতম মালিকের মৃতদেহ উদ্ধার হয় বাড়ির কাছে খড়ি নদী থেকে। জেলা থেকে আসা ডুবুরি দল তাঁর খোঁজ পায়। রবিবার ভোরে ভাতারের কাপপোড় গ্রামেও দেওয়াল চাপা পড়ে রাধারানি মেটে (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভোরে বাড়ির সদর দরজায় জল দেওয়ার সময় দেওয়াল চাপা পড়েন ওই বৃদ্ধা। বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হলে সেখানেই মারা যান তিনি। গলসির পারাজেও গোয়ালে দুধ দোয়ানোর সময় দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় পদ্মা ঘোষ (৩৪) নামে এক বধূর। মারা যায় গরুটিও। গোয়ালে থাকা আরও দুটি গরুর কোমর ভেঙে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
বাঁধে ফাটল
রবিবার, মঙ্গলকোটের মালিয়ারা গ্রামে অজয়ের উপর থাকা একটি বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। সেটি মেরামতিও করা হয়েছে। কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের এড়খি থেকে ত্যাওড়া পর্যন্ত মোট ১৩টি জায়গার নদী বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। সেগুলি মেরামতি করা হলেও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ‘‘নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে মেরামতি হয়েছে।’’ বেশ কয়েকটি জায়গায় ত্রাণ পৌঁছচ্ছে না বলেও অভিযোগ। কাটোয়ার খালপাড়ায় এলাকায় লঙ্গরখানা খোলা হয়েছে।
ত্রাণ শিবিরে
রবিবার পর্যন্ত, জেলায় ৪৭৪টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার জানান, মোট ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। বিকেল থেকে অজয়ের জল বেড়ে ভেসেছে আউশগ্রাম, কেতুগ্রামের কিছু অংশও।
নৌকা ডুবি
কাটোয়ার পানুহাটের কয়েকটি এলাকা থেকে নৌকায় করে বাসিন্দারা মালপত্র নিয়ে কাটোয়া শহরের দিকে আসছিলেন। আচমকা নৌকা ডুবে গেলে মালপত্র সব নষ্ট হয়ে যায়। তবে কোনও প্রাণহানির খবর নেই। রাস্তা জলে ভেসে যোগাযোগ বন্ধ বর্ধমান-সিউড়ি, কাটোয়া-করুই-সহ নানা রাস্তায়।
কর্তা জানান
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘কালনার ঝাউডাঙার পাটুলি থেকে ৩০০ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গোটা পরিস্থিতি ঘিরে প্রশাসন যথেষ্ট উদ্বিগ্ন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy